ভোমরা বন্দরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে রাজস্ব বৃদ্ধি
দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর, যেখানে এক্সপোর্ট-ইনপোর্ট কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত রাজস্বের চেয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হয়। এটি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। তবে অতীতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, যানজট, এবং অব্যবস্থাপনার কারণে এই বন্দরটির কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল।
গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর অক্টোবর মাসে ভোমরা সি অ্যান্ড এফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. আবু হাসান ও আবু মুছা প্যানেল নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেন। নবনির্বাচিত সভাপতি আবু হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা দায়িত্ব গ্রহণের পর বন্দরটির শৃঙ্খলা ফেরাতে বিভিন্ন ইতিবাচক উদ্যোগ নেন।
স্থলবন্দরে খালি ট্রাকগুলোর জন্য নির্দিষ্ট পার্কিং না থাকায় আগে ব্যাপক যানজট দেখা দিত। এর ফলে এক্সপোর্ট কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতো এবং রপ্তানিকারকরা বেনাপোলসহ অন্যান্য বন্দরের দিকে ঝুঁকতেন। যানজটের কারণে বিজিবি এবং অন্যান্য প্রশাসনের কাজেও ব্যাঘাত ঘটত। পথচারীদের দুর্ভোগও ছিল উল্লেখযোগ্য।
এই সমস্যার সমাধানে সভাপতি আবু হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং যানজট নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ডিসেম্বর মাসে বন্দরের সড়ক সংলগ্ন এলাকায় পরিবেশবান্ধব পার্কিং ব্যবস্থা চালু করা হয়। এতে লাইন্সম্যান এবং কর্মচারীদের মাধ্যমে নামমাত্র খরচে ট্রাকগুলোর জন্য সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। ফলে যানজট দূর হয়ে বন্দরের সড়কগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে।
শৃঙ্খলা ফেরায় রপ্তানিকারকদের মধ্যে আবারও ভোমরা বন্দর ব্যবহারের আগ্রহ বাড়ছে। এর ফলে এক্সপোর্ট সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং রাজস্ব বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
সি অ্যান্ড এফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন যাতে বন্দরটি নিরাপদ এবং অবাধ এক্সপোর্ট সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে। তবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের উন্নয়নমূলক কাজগুলো বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তারা আরও জানান, এসব কুচক্রী মহল শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সফল করতে চায়।
বন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং জেলার সচেতন মহল বর্তমান কমিটির উদ্যোগগুলোকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বানিজ্যিক সুবিধা, স্বচ্ছ জবাবদিহিতা, যাতায়াত সুবিধা, এবং বর্ডার সুরক্ষায় এ উদ্যোগগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
ভোমরা স্থলবন্দরের বর্তমান ব্যবস্থাপনা শুধু এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।