ভিক্ষাবৃত্তির চেয়েও বেশি ঘৃণ্য: চাঁদাবাজি ও ঘুষ
ভিক্ষাবৃত্তি, ঘুষ এবং চাঁদাবাজি, তিনটি বিষয়ই সমাজে প্রভাব ফেলে। তবে ধর্মীয় ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়, চাঁদাবাজি ও ঘুষ ভিক্ষাবৃত্তির চেয়ে অনেক বেশি ঘৃণ্য ও ক্ষতিকর।
চাঁদাবাজি হলো বলপ্রয়োগ বা হুমকি দিয়ে অন্যের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায়ের পদ্ধতি। এটি মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে, ভীতি ছড়ায় এবং ব্যক্তির স্বাধীনতা ও সম্পত্তির অধিকার লঙ্ঘন করে।
ঘুষ হল অবৈধ সুবিধার জন্য কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে অর্থ বা মূল্যবান কিছু দেওয়া। এতে যোগ্যতার বদলে অর্থের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা ন্যায়বিচার ধ্বংস করে এবং সমাজে দুর্নীতি ছড়িয়ে দেয়।
অন্যদিকে, ভিক্ষাবৃত্তি সাধারণত অসহায় মানুষের নিষ্ক্রিয় অসহায়ত্ব, যা টিকে থাকার প্রয়াস। এটি কোন অপরাধ নয়, বরং সমাজের করুণা ও সাহায্যের বিষয়।
বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষায় ঘুষ ও চাঁদাবাজি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং তাদেরকে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়-
ইসলাম: ঘুষ নেওয়া ও দেওয়া দুটোই নিষিদ্ধ; হাদিসে বলা হয়েছে ঘুষদাতা ও গ্রহীতার ওপর আল্লাহর অভিশাপ। চাঁদাবাজি অন্যায় অধিকার হরণ, যা বড় গুনাহ।
হিন্দুধর্ম: ঘুষ ও শোষণকে ‘অধর্ম’ বলা হয়, যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
খ্রিস্টধর্ম: বাইবেলে লোভ ও দুর্নীতি কঠোরভাবে নিন্দিত, যা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নিন্দনীয়।
ভিক্ষাবৃত্তিকে ধর্মগুলো সাধারণত চরম দরিদ্রতা ও অসহায়তার ফল হিসেবে দেখে এবং দরিদ্রদের প্রতি সাহায্য ও দানকে সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করে।
সুতরাং, চাঁদাবাজি ও ঘুষ শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সামাজিক এক বড় অপবিত্র অপরাধ, যা ন্যায়বিচার, সততা ও মানবিকতার মূলনীতি লঙ্ঘন করে। আর ভিক্ষাবৃত্তি হলো অসহায়ত্বের প্রতিফলন, যা আমাদের মানবিক সহানুভূতির দাবি রাখে।