ব্রহ্মপুত্র নদে হাজারো হিন্দু পুণ্যার্থীর অষ্টমী স্নান
জগতের পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি, আত্মশুদ্ধি ও চিরস্থায়ী পুণ্যলাভের আশায় জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র নদে পবিত্র অষ্টমী স্নানে অংশ নিয়েছেন হাজারো হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থী।
শনিবার (৫ এপ্রিল) ভোর থেকেই জামালপুর শহরের দক্ষিণ প্রান্তে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে শুরু হয় এই স্নান উৎসব। প্রতিবছরের মতো এবারও অষ্টমী তিথিকে কেন্দ্র করে নদীর তীরজুড়ে গড়ে ওঠে এক বিশাল ধর্মীয় সমাবেশ। শেরপুর-জামালপুর সেতু এলাকার দক্ষিণ অংশে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ভক্তিপূর্ণ পরিবেশে স্নান করেন।
হিন্দু ধর্ম মতে, অষ্টমী তিথিতে নদীতে স্নান অত্যন্ত পুণ্যফলদায়ী। সেই বিশ্বাস থেকেই জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভক্তরা নির্দিষ্ট সময়ে নদীতে অবগাহন করেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন ফুল, বেলপাতা, ডাব, ধান, দুর্বা, হালুয়া এবং পূজার নানা উপকরণ। নদীতীরে স্নান ও পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে তাঁরা ধর্মীয় আচার পালন করেন।
স্নান শেষে পুণ্যার্থীরা যান জামালপুর শহরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী কালী মন্দিরে। সেখানে চলে পূজা-অর্চনা, অর্ঘ্য প্রদান ও আত্মিক শান্তি লাভের প্রার্থনা।
অষ্টমী স্নানকে ঘিরে মন্দির প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় বসেছে তিন দিনব্যাপী অষ্টমী মেলা। এই মেলায় হস্তশিল্প, প্রসাধনী, খাবারসহ নানা সামগ্রী নিয়ে অংশ নিয়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। ফলে পুরো এলাকা হয়ে ওঠে মুখর ও উৎসবমুখর।
এদিকে, অষ্টমী স্নান ও মেলাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জামালপুর জেলা পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম এই পবিত্র উৎসবটি ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতা, শান্তি, ভক্তি ও মিলনমেলার আবহে পরিণত করে জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র নদতীরকে।