ঢাকা ১২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই, কর্মসূচির দিকে যাবো: মাশফিক

চেকপোস্ট প্রতিবেদক::

কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম বলেছেন, “আমরা আজ অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আজকের এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। ফলে আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবো। দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।”

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। বৈঠক শেষে ছাত্র প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

জোবায়ের পাটোয়ারী নামে আরেক ছাত্র প্রতিনিধি বলেন, “আমাদের আন্দোলন ৮ মাস ধরে চলছে। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে জনদুর্ভোগ তৈরি করছি না। আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। আমরা সচিবালয়ে যাওয়ার পরেও এর সমাধান করা হয়নি। আমাদের সঙ্গে সরাসরি প্রতারণা করা হয়েছে। আজকের যে অতিরিক্ত সচিব আমাদের সঙ্গে বসেছেন, তিনি নিজেও জানতেন না যে শিক্ষা উপদেষ্টা থাকার কথা ছিল। তারা অযৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে সময় নষ্ট করেছেন। আমরা দীর্ঘমেয়াদে যেতে চাই না। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হোক। ফলে জনদুর্ভোগ যতটা সম্ভব কমিয়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাকটরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাকটর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাকটরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে। কারিগরি (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু এবং শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।

গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা তাদের ৬ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ঢাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারাদেশে জেলায় জেলায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে যান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শোয়াইব আহমাদ খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং পদোন্নতিতে ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাকটরদের’ কোনো কোটা রাখা হবে না বলেও জানান।

ডিজি ও অধ্যক্ষের আশ্বাসের পরও সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করেন, প্রত্যেকটি দাবি পূরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

ছয় দফা দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে রেলপথ ব্লকেড এবং অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আশ্বাসে কর্মসূচি শিথিল করে শিক্ষার্থীরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
৫১৯ বার পড়া হয়েছে

বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই, কর্মসূচির দিকে যাবো: মাশফিক

আপডেট সময় ১১:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম বলেছেন, “আমরা আজ অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আজকের এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। ফলে আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবো। দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।”

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। বৈঠক শেষে ছাত্র প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

জোবায়ের পাটোয়ারী নামে আরেক ছাত্র প্রতিনিধি বলেন, “আমাদের আন্দোলন ৮ মাস ধরে চলছে। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে জনদুর্ভোগ তৈরি করছি না। আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। আমরা সচিবালয়ে যাওয়ার পরেও এর সমাধান করা হয়নি। আমাদের সঙ্গে সরাসরি প্রতারণা করা হয়েছে। আজকের যে অতিরিক্ত সচিব আমাদের সঙ্গে বসেছেন, তিনি নিজেও জানতেন না যে শিক্ষা উপদেষ্টা থাকার কথা ছিল। তারা অযৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে সময় নষ্ট করেছেন। আমরা দীর্ঘমেয়াদে যেতে চাই না। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হোক। ফলে জনদুর্ভোগ যতটা সম্ভব কমিয়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাকটরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাকটর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাকটরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে। কারিগরি (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু এবং শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।

গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা তাদের ৬ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ঢাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সারাদেশে জেলায় জেলায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে যান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শোয়াইব আহমাদ খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং পদোন্নতিতে ‘ক্রাফট ইনস্ট্রাকটরদের’ কোনো কোটা রাখা হবে না বলেও জানান।

ডিজি ও অধ্যক্ষের আশ্বাসের পরও সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করেন, প্রত্যেকটি দাবি পূরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

ছয় দফা দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে রেলপথ ব্লকেড এবং অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আশ্বাসে কর্মসূচি শিথিল করে শিক্ষার্থীরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।