বীরগঞ্জে আলুর দাম ও সংরক্ষণ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
বীরগঞ্জ উপজেলায় এবারের আলুর ফলন ছিল অত্যন্ত ভালো, কারণ আবহাওয়া ছিল অনুকূল। তবে কৃষকদের সামনে বড় দুইটি সমস্যা দাঁড়িয়ে রয়েছে—আলুর ন্যায্য দাম পাওয়া এবং আলু সংরক্ষণের সমস্যা। কৃষকরা জানিয়েছেন, এবার তারা প্রতি কেজি বীজ আলু ১০০ টাকা দরে কিনে জমিতে রোপণ করেছেন, যার কারণে উৎপাদন ব্যয় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু এখন বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজি ১৩-১৫ টাকা, ফলে কৃষকরা উৎপাদন খরচও উঠাতে পারছেন না। এতে বিঘাপ্রতি তাদের লোকসান হচ্ছে প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা।
এছাড়া, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি, কৃষক ও আলু ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও ফজলে এলাহী চারটি হিমাগার সীলগালা করেছেন। হিমাগারে বীজ আলু সংরক্ষণের জন্য ভাড়া বাড়ানোর কারণে কৃষকদের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার বীরগঞ্জ উপজেলায় ৯ হাজার ৮৫৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা অতিক্রম করা হয়েছে। এবারের ফলন দ্বিগুণ হওয়ার পরও দাম কম থাকার কারণে কৃষকরা চিন্তিত। উৎপাদন খরচ না ওঠায় তারা বড় ধরনের লোকসান হুমকির মুখে পড়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে কৃষকরা এখন আলু উত্তোলনে ব্যস্ত। অনেক কৃষক তাদের ধার দেনা পরিশোধের জন্য প্রতি কেজি আলু মাত্র ১৩ টাকায় বিক্রি করছেন, আবার কেউ কেউ আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করার জন্য হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়েছেন। কিছু কৃষক আবার আলু বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন সংরক্ষণ করতে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফজলে এলাহী বলেছেন, “হিমাগার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে আলু সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” তবে, কৃষকদের জন্য দ্রুত সমাধান না হলে আলুর বাজার মূল্য আরও নিম্নমুখী হতে পারে, যা তাদের জন্য আরও বড় সংকট তৈরি করবে।