হত্যা মামলায় তিন ভাইয়ের যাবজ্জীবন, স্বজনদের দাবি-তারা নির্দোষ
বিএনপি পরিবারকে নিঃস্ব করে দিল আওয়ামী রাজনৈতিক প্রতিহিংসা
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মৌলভীবাজারের একটি বিএনপি সমর্থক পরিবার আজ নিঃস্ব। ১১ বছর আগে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘটিত একটি মারামারির ঘটনায় বিএনপি সমর্থক পরিবারের তিন ভাইসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়। তবে এলাকাবাসীর দাবি, এই মামলায় প্রকৃত দোষীদের আড়াল করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিরপরাধ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে।
২০১৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার ১ নং খলিলপুর ইউনিয়নের নাদামপুর গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ থেকে মারামারি বাঁধে। তিন দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আব্দুল গাফফার। ঘটনার পর প্রথমে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম এজাহারে থাকলেও পরে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু বিএনপি সমর্থক পরিবারের তিন ভাই মনির হোসেন (৪৬), মীর হোসেন (৩৩) ও আব্দুল মুকিত (৫০)-কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া, একই গ্রামের শাহিন মিয়াসহ বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
১ নং আসামী মনির হোসেন বিএনপির খলিলপুর ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ডের সহ-যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, শুধুমাত্র বিএনপি সমর্থক হওয়ার কারণেই তাদের এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, আওয়ামী লীগ নেতা আশ্রাফ আলী খান, নিহত গাফফারের ভাই আব্দুস সবুর ও সোহেল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে প্রতিপক্ষ বিএনপি পরিবারের উপর দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছিল। তারা ১৬-১৭ বছর আগে মনির হোসেনদের জমি দখল করেছিল। ঘটনার দিন সকালে আব্দুল মুকিতের সঙ্গে গাফফারের ঝগড়া হয় এবং বেলা ১১টার দিকে মনির হোসেনের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে মনির গুরুতর আহত হন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
মনির হোসেনের স্ত্রী রুবিনা বেগম ও শাহিন মিয়ার স্ত্রী সাবানা বেগম জানান, গত ১১ বছর তারা চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ছোট সন্তানরা এখন বড় হয়ে কোনো রকমে অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছে। সন্তানদের ঠিকমতো পড়াশোনাও করাতে পারেননি তারা।
বর্তমানে মামলাটির আপিল আদালতে চলমান রয়েছে। স্বজনরা নিরপরাধদের মুক্তির দাবি জানিয়ে প্রশাসন ও সরকারের কাছে সুবিচার প্রার্থনা করেছেন।