ঢাকা ০৭:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ দলিল লেখক মাসুকের বিরুদ্ধে

বানিয়াচংয়ে অন্যর জমি নিজের বলে বিক্রি!

স্টাফ রিপোর্টার::

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সাবরেজিস্টার অফিসে একটি বড় ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অন্যের জমি নিজের বলে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আছেন সাবরেজিস্টার অফিসের কর্মরত দলিল লেখক মাসুক মিয়া, যিনি প্রতারক সুনীল চন্দ্র গোপকে জমি বিক্রি করার কাজে সহযোগিতা করেছেন।

১৩ নভেম্বর বুধবার বানিয়াচং সাবরেজিস্টার অফিসে সুনীল চন্দ্র গোপ ভূয়া মালিক হিসেবে অন্যের জমি বিক্রি করার জন্য দলিল রেজিস্ট্রির চেষ্টা করেন, আর এতে সহযোগিতা করেন দলিল লেখক মাসুক মিয়া। মাসুক মিয়া সাবরেজিস্টারের কাছে সঠিক তথ্য না দিয়ে ভূয়া মালিককে প্রকৃত মালিক হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং জমির রেজিস্ট্রি করিয়ে নেন। এই ঘটনায় লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে, মাসুক মিয়া এবং সুনীল চন্দ্র গোপ সাবরেজিস্টারকে ধোকা দিয়ে প্রতারণা করেছেন। তারা এ ধরনের জালিয়াতির মাধ্যমে জমি বিক্রির কাজ সম্পন্ন করেছেন এবং সাবরেজিস্টারের অজ্ঞাতে এই কাজটি করেছেন।

প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন যে, তিনি সুনীল চন্দ্র গোপকে চেনেন। একদিন তিনি দেখতে পান সুনীল চন্দ্র গোপের ছবি ব্যবহার করে তার জমির দলিলে বিজন বিহারী চৌধুরীর নাম লেখা হয়েছে। এর পর তিনি তাদের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন, এবং তর্ক বিতর্কের পর তিনি বুঝতে পারেন যে, সুনীল চন্দ্র গোপ অন্যের জমি নিজের বলে বিক্রি করছে।

এই ব্যক্তি জানান, তিনি নিজে তার পিতার জমি বিক্রি করার জন্য রেজিস্ট্রারী অফিসে এসেছিলেন, এবং কাজের ফাঁকে সুনীল চন্দ্র গোপ এবং মাসুক মিয়ার জালিয়াতির কার্যক্রম দেখে তিনি অবাক হন। এরপর তিনি বিষয়টি স্থানীয় সাবরেজিস্টার অফিসের কর্মচারীদের জানান এবং সাংবাদিকদের কাছে এ ঘটনা তুলে ধরেন।

এই ব্যক্তি আরও জানান, তিনি সাবরেজিস্টার মোঃ জাকির হোসেনকে বিষয়টি জানাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি দুপুরের খাবারের জন্য অফিসে ছিলেন না, যার ফলে সাবরেজিস্টারকে অবগত করতে পারেননি। তিনি সাবরেজিস্টারের দায় কিছুটা মেনে নিয়ে বলেন, “অফিসের কর্মচারীরা যদি এমন কর্মকান্ডে জড়িত হন, তবে স্যারের কী করার থাকে?”

এছাড়া, এই ব্যক্তি বলেন যে দলিল লেখক মাসুক মিয়া তার সামান্য লাভের জন্য নিজের সাবরেজিস্টার স্যারকে ধোঁকা দিয়ে প্রতারণাকারী সুনীল চন্দ্র গোপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন। তার মতে, মাসুক মিয়া এমন কাজের জন্য “ব্যাকমেইলের” মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রারি করেছেন। দলিল নাম্বার ৫১৭১ সহ আরও তথ্য নিয়ে তিনি এই ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন।

এ বিষয়ে আরও জানা গেছে, সুনীল চন্দ্র গোপের নাগরিক পরিচয়পত্র এবং ভোটার লিস্টে তার আসল নাম সুনীল চন্দ্র গোপ হিসেবে রয়েছে। তিনি বানিয়াচং উপজেলার ১৩ নং মন্দরী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর সাঙ্গর আখড়া হাঁটিতে বসবাস করছেন এবং তার পিতার নাম মহেন্দ্র চন্দ্র গোপ।

বানিয়াচং উপজেলার সাবরেজিস্টার মোঃ জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনায় সচেতন মহল অভিযোগ তুলেছে যে, এই দুইজনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা উচিত এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয়রা দলিল লেখক মাসুক মিয়ার লাইসেন্স বাতিল করারও দাবি জানিয়েছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:৪৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
৫১০ বার পড়া হয়েছে

লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ দলিল লেখক মাসুকের বিরুদ্ধে

বানিয়াচংয়ে অন্যর জমি নিজের বলে বিক্রি!

আপডেট সময় ১১:৪৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সাবরেজিস্টার অফিসে একটি বড় ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অন্যের জমি নিজের বলে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আছেন সাবরেজিস্টার অফিসের কর্মরত দলিল লেখক মাসুক মিয়া, যিনি প্রতারক সুনীল চন্দ্র গোপকে জমি বিক্রি করার কাজে সহযোগিতা করেছেন।

১৩ নভেম্বর বুধবার বানিয়াচং সাবরেজিস্টার অফিসে সুনীল চন্দ্র গোপ ভূয়া মালিক হিসেবে অন্যের জমি বিক্রি করার জন্য দলিল রেজিস্ট্রির চেষ্টা করেন, আর এতে সহযোগিতা করেন দলিল লেখক মাসুক মিয়া। মাসুক মিয়া সাবরেজিস্টারের কাছে সঠিক তথ্য না দিয়ে ভূয়া মালিককে প্রকৃত মালিক হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং জমির রেজিস্ট্রি করিয়ে নেন। এই ঘটনায় লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে, মাসুক মিয়া এবং সুনীল চন্দ্র গোপ সাবরেজিস্টারকে ধোকা দিয়ে প্রতারণা করেছেন। তারা এ ধরনের জালিয়াতির মাধ্যমে জমি বিক্রির কাজ সম্পন্ন করেছেন এবং সাবরেজিস্টারের অজ্ঞাতে এই কাজটি করেছেন।

প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন যে, তিনি সুনীল চন্দ্র গোপকে চেনেন। একদিন তিনি দেখতে পান সুনীল চন্দ্র গোপের ছবি ব্যবহার করে তার জমির দলিলে বিজন বিহারী চৌধুরীর নাম লেখা হয়েছে। এর পর তিনি তাদের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন, এবং তর্ক বিতর্কের পর তিনি বুঝতে পারেন যে, সুনীল চন্দ্র গোপ অন্যের জমি নিজের বলে বিক্রি করছে।

এই ব্যক্তি জানান, তিনি নিজে তার পিতার জমি বিক্রি করার জন্য রেজিস্ট্রারী অফিসে এসেছিলেন, এবং কাজের ফাঁকে সুনীল চন্দ্র গোপ এবং মাসুক মিয়ার জালিয়াতির কার্যক্রম দেখে তিনি অবাক হন। এরপর তিনি বিষয়টি স্থানীয় সাবরেজিস্টার অফিসের কর্মচারীদের জানান এবং সাংবাদিকদের কাছে এ ঘটনা তুলে ধরেন।

এই ব্যক্তি আরও জানান, তিনি সাবরেজিস্টার মোঃ জাকির হোসেনকে বিষয়টি জানাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি দুপুরের খাবারের জন্য অফিসে ছিলেন না, যার ফলে সাবরেজিস্টারকে অবগত করতে পারেননি। তিনি সাবরেজিস্টারের দায় কিছুটা মেনে নিয়ে বলেন, “অফিসের কর্মচারীরা যদি এমন কর্মকান্ডে জড়িত হন, তবে স্যারের কী করার থাকে?”

এছাড়া, এই ব্যক্তি বলেন যে দলিল লেখক মাসুক মিয়া তার সামান্য লাভের জন্য নিজের সাবরেজিস্টার স্যারকে ধোঁকা দিয়ে প্রতারণাকারী সুনীল চন্দ্র গোপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন। তার মতে, মাসুক মিয়া এমন কাজের জন্য “ব্যাকমেইলের” মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রারি করেছেন। দলিল নাম্বার ৫১৭১ সহ আরও তথ্য নিয়ে তিনি এই ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন।

এ বিষয়ে আরও জানা গেছে, সুনীল চন্দ্র গোপের নাগরিক পরিচয়পত্র এবং ভোটার লিস্টে তার আসল নাম সুনীল চন্দ্র গোপ হিসেবে রয়েছে। তিনি বানিয়াচং উপজেলার ১৩ নং মন্দরী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর সাঙ্গর আখড়া হাঁটিতে বসবাস করছেন এবং তার পিতার নাম মহেন্দ্র চন্দ্র গোপ।

বানিয়াচং উপজেলার সাবরেজিস্টার মোঃ জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনায় সচেতন মহল অভিযোগ তুলেছে যে, এই দুইজনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা উচিত এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয়রা দলিল লেখক মাসুক মিয়ার লাইসেন্স বাতিল করারও দাবি জানিয়েছেন।