বাগেরহাটে ভূমিদস্যু আওয়াল মীরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
চাঁদাবাজি, ভূমি দস্যুতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা আওয়াল মীরের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন বাগেরহাট সদরের শ্রীঘাট, সদুল্যপুর, রঘুনাথপুর এবং উৎকূল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে শ্রীঘাট-উৎকূল সড়কে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী। তারা আওয়াল মীরের বিচার দাবি করে স্লোগান দেন এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়াল মীর শ্রীঘাট এলাকার লোকমান মীরের ছেলে এবং তার ভাই, বাংলাদেশ সরকারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব বাবর আলী মীরের প্রভাবের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন অপরাধ এবং অপকর্ম চালাচ্ছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সচিব ভাইয়ের ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়াল মীর এলাকায় চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, মৎস্য ঘের দখলসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
এছাড়াও, ১/১১ সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়াল মীর দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছেন। তিনি শাসক দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের একজন নেতা, যার কারণে তাকে এলাকায় অত্যাচার ও অন্যায় কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, আওয়াল মীর কমপক্ষে ৩০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি, জামায়াত এবং তারেক রহমানকে নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করেন।
সম্প্রতি, রবিবার (৯ মার্চ) সকালে আওয়াল মীর তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে রঘুনাথপুর এলাকার শেখ মিজানুর রহমানের মৎস্য খামার থেকে চিংড়ি ও সাদা মাছ নিয়ে যায়, যার মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা। এ সময় পারভেজ, মিজান, শহিদুলসহ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
এছাড়াও, অভিযোগ রয়েছে যে, আওয়াল মীর তার ভাইয়ের প্রভাব ব্যবহার করে এলাকায় সরকারি খাল দখল করার চেষ্টা করছেন। স্থানীয়রা জানান, তিনি একাধিকবার মাছ চুরি, জবরদস্তি দখল, হুমকি দেওয়া এবং শারীরিক নিপীড়ন চালিয়ে এলাকায় এক নরকীয় পরিবেশ তৈরি করেছেন।
অন্যদিকে, আওয়াল মীর তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং বর্তমানে বাগেরহাটের বাইরে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলোর কোন ভিত্তি নেই।
বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান জানান, এই বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়রা প্রশাসন থেকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন, যেন তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং আওয়াল মীরের মতো ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।