বাগেরহাটের রামপালে মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীসহ দুইজনকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা, থানায় এজাহার দায়ের
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার মুজিবনগর গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীসহ দু’জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে একটি সন্ত্রাসী চক্র। এ ঘটনায় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে ভিকটিম বাবুল হোসেনের মেয়ে সাবরিনা খাতুন ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮-১০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে রামপাল থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মুজিবনগর গ্রামের মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী শেখ বাবুল হোসেন শান্তিপূর্ণভাবে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তার সঙ্গে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী সরদার রকিবুল ইসলাম মুক্ত, তার ভাই কাঞ্চন সরদার, ফিরোজ সরদার, রেজা ফকির, মনির তালুকদার, আবু হুরাইরা, শেখ আবু দাইয়ান, শেখ সারুফ, শিকদার মামুনসহ মোট ২৪ জনের দীর্ঘদিন ধরে জমি ও ঘের সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল।
ঘটনার দিন ১১ এপ্রিল রাত ১টার দিকে, বাবুল হোসেন তার ভাগ্নে শেখ মাঞ্জুরকে নিয়ে ঘেরে যাচ্ছিলেন। পথে আসফাক গাজীর বাড়ির সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা হামলাকারীরা কুড়াল, রাম দা, রড ও লাঠি নিয়ে তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়।
মুক্তর নির্দেশে কাঞ্চন সরদার কুড়াল দিয়ে বাবুলের মাথায় কোপ দেয়, এবং অন্য আসামিরা রামদা, ছুরি ও লাঠি দিয়ে বাবুল ও মাঞ্জুরকে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আহতদের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
খবর পেয়ে স্বজনরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) রেফার করা হয়।
উল্লেখ্য, ঘটনার আগে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকায় মুক্ত ও কাঞ্চনের নেতৃত্বে লিমন নামের এক যুবককে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, মুক্ত ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে বাঁশতলী, গিলাতলা, মুজিবনগর, তেঘরিয়া ও ইসলামাবাদসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
এ বিষয়ে রামপাল থানার সদ্য যোগদানকারী ওসি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার একটি লিখিত এজাহার হাতে পেয়েছি। একজন হাইকোর্টের বেঞ্চ সহকারী আসার পর মামলাটি রেকর্ড করা হবে। এলাকায় কেউ অস্থিতিশীলতা তৈরি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার পর মুজিবনগর ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর দাবি, দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক, যাতে এলাকায় শান্তি ফিরে আসে।