বাগমারায় প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা প্রশাসন
রাজশাহীর বাগমারার সেই প্রতিবন্ধী পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হুইলচেয়ার বিতরণের মাধ্যমে সহায়তা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
প্রথম আলোর অনলাইনে “স্বামী-স্ত্রীসহ ৮ সদস্যের পরিবারে ৬ জনই প্রতিবন্ধী” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি নজরে আসে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলামের। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে পরিবারটির খোঁজখবর নেন। পরিবারের উপার্জনক্ষম স্বাভাবিক থাকা সদস্য রেজাউল হককে নিজ দপ্তরে ডেকে পাঠান এবং তার সঙ্গে কথা বলেন। মূল সমস্যাগুলো শোনার পর, পরিবারের কয়েকজনের হুইলচেয়ারের প্রয়োজন হওয়ায় দ্রুত তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের প্রতিবন্ধী সদস্যদের প্রতিনিধি রেজাউল হককে নিজ দপ্তরে ডেকে তাঁদের চলাচলের জন্য হুইলচেয়ার ও ট্রাইসাইকেল প্রদান করা হয়। পাশাপাশি, একই সময়ে উপজেলার আরও ২৪ জন প্রতিবন্ধীকে হুইলচেয়ার ও ছয়জনকে ট্রাইসাইকেল দেওয়া হয়।
হুইলচেয়ার পেয়ে খুশি হন পরিবারের সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী খলিলুর রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমানসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ। আরিকুল্লাহ বলেন, “আগে ঘর ও বারান্দায় সময় কাটাতে হতো, এখন চেয়ার পাওয়ায় উঠান ও বাড়ির আশপাশে যেতে পারবো। নিজেও কিছু একটা কাজ করতে পারবো।”
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, তিনি পত্রিকার মাধ্যমে পরিবারের দুর্দশার কথা জানতে পারেন এবং প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে হুইলচেয়ার বিতরণ করা হলো। তিনি বলেন, “পরিবারের অসহায়ত্ব ও জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় আরও সহায়তা করা হবে। আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ স্থায়ী উপার্জনের ব্যবস্থাও করা হবে।”
আরিকুল্লাহ-রেজিয়া দম্পতির বাড়ি রাজশাহীর বাগমারার গনিপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামে। তাঁদের পরিবারের মোট সদস্য আটজন, যার মধ্যে ছয়জনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। কেউই জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী ছিলেন না, বরং ১১-১২ বছর বয়সে অসুস্থতার কারণে তাঁরা পঙ্গুত্ব বরণ করেন। বর্তমানে তাঁরা বিনা চিকিৎসায় এবং খাবারের সংকটে দিনযাপন করছেন। পরিবারের দেখভাল করছেন স্বাভাবিক থাকা একমাত্র ছেলে রেজাউল হক, যিনি এখনো বিয়ে করেননি।