ফ্যাসিবাদমুক্ত নববর্ষে ঢাকায় বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা
‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঢাকায় উদযাপিত হচ্ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। ইউনেস্কো স্বীকৃত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম এবার পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। আজ সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়েছে।
শোভাযাত্রা চারুকলা অনুষদ থেকে শাহবাগ, টিএসসি, শহিদ মিনার ও দোয়েল চত্বর হয়ে পুনরায় চারুকলায় গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় রঙ-বেরঙের মুখোশ, কাগজের তৈরি বিশালাকৃতির পাখি, পশু ও নানা রঙের শিল্পকর্মের সমাহার ছিল নজরকাড়া।
চারুকলা চত্বরে দিনটি শুরু হয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাণী পাঠের মাধ্যমে। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে রাজধানীতে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। ঢাকাবাসী ভোর থেকেই রঙিন পোশাক পরে প্রিয়জনের সঙ্গে বের হয়েছেন নববর্ষকে বরণ করতে।
এবারের আয়োজনে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল নতুন মাত্রার। শোভাযাত্রার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শোভাযাত্রার সামনের দিক থেকে সরে দুই পাশে অবস্থান নিয়েছেন। শাহবাগ ও টিএসসির মেট্রোরেল স্টেশন শোভাযাত্রার সময় বন্ধ রাখা হলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিকাল ৫টার পর জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তবে নগরীর অন্যান্য স্থানে সন্ধ্যার পরও উৎসব চলবে।
অনেকেই মনে করছেন, প্রায় ১৬ বছরের রাজনৈতিক নিপীড়ন, ফ্যাসিবাদ ও দমনপীড়নের পরিবেশ থেকে বের হয়ে এই বছরটি এক মুক্ত শ্বাস নেওয়ার বছর। তাই এবারের নববর্ষ উদযাপন শুধুই একটি উৎসব নয়—এ যেন এক প্রতীকী মুক্তি।
আজ বাংলা ১৪৩২ সালকে বরণ করে নিতে হাজারো মানুষ গাইছে—“এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।” বাংলার গ্রাম থেকে শহর, প্রান্ত থেকে নগর—সবখানে আজ আনন্দ আর উৎসবের ছোঁয়া।