ঢাকা ০৬:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পর্দানশীন নারীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে হবিগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্টিত

স্টাফ রিপোর্টার::

নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে হবিগঞ্জে মানববন্ধন

পর্দানশীন নারীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিতকরণের দাবিতে হবিগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘পর্দানশীন নারী অধিকার পরিষদ’ নামের একটি মহিলা সংগঠন। সংগঠনের ব্যানারে স্থানীয় পর্দানশীন নারীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্টিত হয়। তাদের দাবি ছিল, ছবি ছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) প্রদান নিশ্চিত করা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, যেখানে সংবিধান অনুযায়ী ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম। সংবিধানের ৪১ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিকের নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। কিন্তু পর্দানশীন নারীদের মুখচ্ছবি না তোলার কারণে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) প্রদান করা হচ্ছে না, যা স্পষ্টতই বৈষম্যমূলক ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

বিগত ১৬ বছর ধরে নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মকর্তার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক নীতির ফলে হাজার হাজার পর্দানশীন নারী এনআইডি পাননি। এর ফলে তারা জমিজমার অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা, চাকরি, বাসা ভাড়া, সন্তানদের স্কুলে ভর্তি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ট্রেনযাত্রাসহ নানান মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বক্তারা আরও বলেন, মুখচ্ছবি যাচাই একটি দুর্নীতিবান্ধব ও প্রতারণার সুযোগ সৃষ্টি করে এমন পদ্ধতি, যেখানে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই ব্যবস্থা অধিক নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। বর্তমানে ব্যাংকিং, ই-পাসপোর্ট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা এনআইডি ও শিক্ষাক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।

মানববন্ধন থেকে পর্দানশীন নারীরা দুটি প্রধান দাবি উত্থাপন করেন-

১. পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার অক্ষুণ্ন রেখে ছবি ছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে এনআইডি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র প্রদান নিশ্চিত করা। ২. ফিঙ্গারপ্রিন্ট গ্রহণের সময় মহিলা অফিস সহকারী নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা।

বক্তারা আরও বলেন, এখনও প্রায় ৩০ লাখ পর্দানশীন নারী এনআইডি পাননি, যা একটি বিশাল সংখ্যা। নারীদের অধিকার নিয়ে অনেক কথা বলা হলেও পর্দানশীন নারীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে নীতিনির্ধারকরা নিশ্চুপ। এটি একটি বড় বৈষম্য, যা অবিলম্বে দূর করতে হবে।

মানববন্ধন শেষে ‘পর্দানশীন নারী অধিকার পরিষদ’-এর পক্ষে আহ্বায়ক আহমদ নিশা মীর ও তার সহকারীরা স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি অবিলম্বে তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা না হয়, তবে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তারা আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেবে এবং পর্দানশীন নারীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৫:০৭:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
৫২৪ বার পড়া হয়েছে

পর্দানশীন নারীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে হবিগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্টিত

আপডেট সময় ০৫:০৭:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

পর্দানশীন নারীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিতকরণের দাবিতে হবিগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘পর্দানশীন নারী অধিকার পরিষদ’ নামের একটি মহিলা সংগঠন। সংগঠনের ব্যানারে স্থানীয় পর্দানশীন নারীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্টিত হয়। তাদের দাবি ছিল, ছবি ছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) প্রদান নিশ্চিত করা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, যেখানে সংবিধান অনুযায়ী ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম। সংবিধানের ৪১ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিকের নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। কিন্তু পর্দানশীন নারীদের মুখচ্ছবি না তোলার কারণে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) প্রদান করা হচ্ছে না, যা স্পষ্টতই বৈষম্যমূলক ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

বিগত ১৬ বছর ধরে নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মকর্তার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক নীতির ফলে হাজার হাজার পর্দানশীন নারী এনআইডি পাননি। এর ফলে তারা জমিজমার অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা, চাকরি, বাসা ভাড়া, সন্তানদের স্কুলে ভর্তি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ট্রেনযাত্রাসহ নানান মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বক্তারা আরও বলেন, মুখচ্ছবি যাচাই একটি দুর্নীতিবান্ধব ও প্রতারণার সুযোগ সৃষ্টি করে এমন পদ্ধতি, যেখানে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই ব্যবস্থা অধিক নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। বর্তমানে ব্যাংকিং, ই-পাসপোর্ট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা এনআইডি ও শিক্ষাক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।

মানববন্ধন থেকে পর্দানশীন নারীরা দুটি প্রধান দাবি উত্থাপন করেন-

১. পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকার অক্ষুণ্ন রেখে ছবি ছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে এনআইডি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র প্রদান নিশ্চিত করা। ২. ফিঙ্গারপ্রিন্ট গ্রহণের সময় মহিলা অফিস সহকারী নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা।

বক্তারা আরও বলেন, এখনও প্রায় ৩০ লাখ পর্দানশীন নারী এনআইডি পাননি, যা একটি বিশাল সংখ্যা। নারীদের অধিকার নিয়ে অনেক কথা বলা হলেও পর্দানশীন নারীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে নীতিনির্ধারকরা নিশ্চুপ। এটি একটি বড় বৈষম্য, যা অবিলম্বে দূর করতে হবে।

মানববন্ধন শেষে ‘পর্দানশীন নারী অধিকার পরিষদ’-এর পক্ষে আহ্বায়ক আহমদ নিশা মীর ও তার সহকারীরা স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি অবিলম্বে তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা না হয়, তবে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তারা আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেবে এবং পর্দানশীন নারীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করবে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464