পঞ্চগড়ে ১৪ জানুয়ারী আটোয়ারী এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের পর হত্যাকারীর পরিচয় উদঘাটিত হয়েছে। প্রথমদিকে ওই তরুণীর পরিচয় না মিললেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
ওই দিন সকালে কিসমত এলাকায় রেললাইনে একটি অজ্ঞাত নারীর ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়, এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করলেও হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারছিল না। প্রথমে দিনাজপুর রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়।
গত ৮ মার্চ রাতে আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর এলাকায় ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে আটক হয় রিফাত বিন সাজ্জাদ নামের এক যুবক। স্থানীয়রা তাকে উত্তম-মধ্যম দেয় এবং তার মোবাইলে একটি নারীকেও বেঁধে রাখার ভিডিও দেখতে পেয়ে পুলিশে দেয়। এরপর পুলিশ তাকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে সাজ্জাদ স্বীকার করে যে, ১৪ জানুয়ারী কিসমত রেলস্টেশনের পাশের রেললাইনে যে নারীর মরদেহ পাওয়া গিয়েছিল, তাকে সে ধর্ষণ করে হত্যার পর রেললাইনে ফেলে রেখেছিল। সাজ্জাদ জানায়, ১৩ জানুয়ারি একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ওই তরুণীর সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর সে ওই তরুণীকে আটোয়ারী উপজেলার কেজি স্কুলের দরজাবিহীন কক্ষে এবং পরে রেলগেটের পার্শ্ববর্তী একটি সুপারী বাগানে ধর্ষণ করে।
কিছু সময় পর সে ওই তরুণীর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করে। পরে সে মরদেহ রেললাইনে ফেলে দেয়।
এ ঘটনার পর দিনাজপুর রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা হলেও হত্যাকারী ধরা পড়েনি। কিন্তু ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে সাজ্জাদ, এবং তার মোবাইলে পাওয়া ভিডিওর সূত্র ধরে বেরিয়ে আসে এই ভয়াবহ হত্যাকান্ডের বিস্তারিত।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী ১০ মার্চ পঞ্চগড় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। সাজ্জাদকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং এ হত্যাকান্ডের পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।