ঢাকা ০৪:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারী পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় আদম ব্যবসায়ী কদম আলী

স্টাফ রিপোর্টার::

হবিগঞ্জ জেলার ভাদৈ ও পাশ্ববর্তী এলাকাগুলোতে আদম ব্যবসার আড়ালে নারী পাচারের অভিযোগ উঠেছে কদম আলী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সহজ-সরল, গরীব যুবতী নারীদের উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর নাম করে প্রতারণা করে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, কদম আলী উত্তর-পূর্ব ভাদৈ গ্রামের মৃত মহুরম আলীর পালকপুত্র। ১৯৮৩ সালে তিনি বাহুবল উপজেলার আদ্যপাশা গ্রাম থেকে দত্তক হিসেবে ভাদৈ গ্রামে নিয়ে আসেন মহুরম আলী। পরবর্তীতে কদম আলীর বিদেশ যাওয়ার জন্য তার পালক পিতা জমি বিক্রি করে অর্থ জোগাড় করেন এবং এক আদম ব্যবসায়ী দালালের মাধ্যমে তার বিদেশ যাত্রার উদ্যোগ নেয়া হয়।

তবে সেই প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে কদম আলীর সঙ্গে ঐ দালালের মেয়ে রাহেনা খাতুনের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কদম আলী ওমানে গিয়ে কয়েক বছর অবস্থান করেন। দেশে ফিরে তিনি নিজেই আদম ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। এলাকার বহু সহজ-সরল মানুষকে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তার হাতে তুলে দেন টাকা।

যথাযথভাবে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে না পারায় প্রতারিত ব্যক্তিরা কদম আলীর পালক পিতা মহুরম আলীর কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানালে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মহুরম আলী তার আরও জমি বিক্রি করে দেন এবং একজন ভুক্তভোগীকে অর্থ ফেরত দেন। পরে কদম আলী সেই অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্টো তার পালক পিতার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও পুলিশ তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

এ ঘটনায় মানসিক চাপে পড়ে মহুরম আলী মৃত্যুবরণ করেন বলে দাবি করে আসছেন এলাকাবাসী। তার মৃত্যুর পর কদম আলী আবারও সক্রিয়ভাবে পুরনো কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন।

বর্তমানে কদম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি আবারও বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে গরীব ও অসহায় যুবতী নারীদের বিদেশে ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই নারীদের কেউ কেউ বিদেশে পাচারের শিকার হচ্ছেন।

মান-সম্মানের ভয়ে ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে না চাইলেও অনেকে জানিয়েছেন, তারা এনজিও থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে কদম আলীকে দিয়েছেন। এখন তারা বুঝতে পারছেন যে এটি একটি সুপরিকল্পিত ফাঁদ ছিল।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:১৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
৫৭১ বার পড়া হয়েছে

নারী পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় আদম ব্যবসায়ী কদম আলী

আপডেট সময় ১০:১৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

হবিগঞ্জ জেলার ভাদৈ ও পাশ্ববর্তী এলাকাগুলোতে আদম ব্যবসার আড়ালে নারী পাচারের অভিযোগ উঠেছে কদম আলী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সহজ-সরল, গরীব যুবতী নারীদের উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর নাম করে প্রতারণা করে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, কদম আলী উত্তর-পূর্ব ভাদৈ গ্রামের মৃত মহুরম আলীর পালকপুত্র। ১৯৮৩ সালে তিনি বাহুবল উপজেলার আদ্যপাশা গ্রাম থেকে দত্তক হিসেবে ভাদৈ গ্রামে নিয়ে আসেন মহুরম আলী। পরবর্তীতে কদম আলীর বিদেশ যাওয়ার জন্য তার পালক পিতা জমি বিক্রি করে অর্থ জোগাড় করেন এবং এক আদম ব্যবসায়ী দালালের মাধ্যমে তার বিদেশ যাত্রার উদ্যোগ নেয়া হয়।

তবে সেই প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে কদম আলীর সঙ্গে ঐ দালালের মেয়ে রাহেনা খাতুনের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কদম আলী ওমানে গিয়ে কয়েক বছর অবস্থান করেন। দেশে ফিরে তিনি নিজেই আদম ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। এলাকার বহু সহজ-সরল মানুষকে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তার হাতে তুলে দেন টাকা।

যথাযথভাবে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে না পারায় প্রতারিত ব্যক্তিরা কদম আলীর পালক পিতা মহুরম আলীর কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানালে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মহুরম আলী তার আরও জমি বিক্রি করে দেন এবং একজন ভুক্তভোগীকে অর্থ ফেরত দেন। পরে কদম আলী সেই অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্টো তার পালক পিতার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও পুলিশ তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

এ ঘটনায় মানসিক চাপে পড়ে মহুরম আলী মৃত্যুবরণ করেন বলে দাবি করে আসছেন এলাকাবাসী। তার মৃত্যুর পর কদম আলী আবারও সক্রিয়ভাবে পুরনো কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন।

বর্তমানে কদম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি আবারও বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে গরীব ও অসহায় যুবতী নারীদের বিদেশে ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই নারীদের কেউ কেউ বিদেশে পাচারের শিকার হচ্ছেন।

মান-সম্মানের ভয়ে ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে না চাইলেও অনেকে জানিয়েছেন, তারা এনজিও থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে কদম আলীকে দিয়েছেন। এখন তারা বুঝতে পারছেন যে এটি একটি সুপরিকল্পিত ফাঁদ ছিল।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।