ঢাকা ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তেরখাদায় পানির দরে বিক্রি হচ্ছে বোরো ধান

রবিউল হোসন খান, খুলনা জেলা প্রতিনিধি::

খুলনার তেরখাদা উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। উপজেলাটির ২৬টি ইউনিয়নে এবার বোরো ধানের উৎপাদন সন্তোষজনক হলেও মাঠ পর্যায়ে সিন্ডিকেটের দাপটে পানির দরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধান ঘরে তোলার আগেই দাদন ও কিস্তির টাকা পরিশোধের চাপে পড়েছেন কৃষকরা। এই সুযোগে সুদখোর মহাজন, এনজিও কর্মী, এবং মধ্যস্বত্বভোগী মজুদদার ও ফড়িয়াদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কৃষকের দুর্বলতাকে পুঁজি করে মনপ্রতি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় ধান কিনে নিচ্ছে। অথচ এক মন ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচই পড়ে যাচ্ছে ৯০০ টাকার বেশি।

জয়সেনা এলাকার চাষি সুজন হালদার জানান, সুদে টাকা নিয়ে তিনি চার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন। ফলন ভালো হলেও ধান ঘরে তোলার আগেই মাঠে এসে হাজির হয় মহাজন। বাধ্য হয়ে ৯০০ টাকা মন দরে ধান বিক্রি করতে হয় ফড়িয়াদের কাছে।

এদিকে উপজেলা সদরের চাল ব্যবসায়ী মো. আবু তাহের জানান, প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান বোঝাই অসংখ্য পরিবহন সরাসরি চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অটো রাইস মিলে। উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক রাজু চৌধুরীও বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কোনো ধরনের বিধিনিষেধ না থাকায় কৃষকদের দুরবস্থার সুযোগ নিচ্ছে সিন্ডিকেট চক্র।

এভাবে নতুন বোরো ধান ট্রাকে করে এলাকার বাইরে চলে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক পুরবী রানী বালা বলেন, “আগামীকাল উপজেলা পরিষদের মিটিং রয়েছে। তারপর থেকেই সরকারি ধান-চাল ক্রয় কার্যক্রম শুরু হবে।”

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি দামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু না করলে তারা প্রতিবছরই এমন অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়বেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৬:১৬:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
৫২০ বার পড়া হয়েছে

তেরখাদায় পানির দরে বিক্রি হচ্ছে বোরো ধান

আপডেট সময় ০৬:১৬:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

খুলনার তেরখাদা উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। উপজেলাটির ২৬টি ইউনিয়নে এবার বোরো ধানের উৎপাদন সন্তোষজনক হলেও মাঠ পর্যায়ে সিন্ডিকেটের দাপটে পানির দরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধান ঘরে তোলার আগেই দাদন ও কিস্তির টাকা পরিশোধের চাপে পড়েছেন কৃষকরা। এই সুযোগে সুদখোর মহাজন, এনজিও কর্মী, এবং মধ্যস্বত্বভোগী মজুদদার ও ফড়িয়াদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কৃষকের দুর্বলতাকে পুঁজি করে মনপ্রতি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় ধান কিনে নিচ্ছে। অথচ এক মন ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচই পড়ে যাচ্ছে ৯০০ টাকার বেশি।

জয়সেনা এলাকার চাষি সুজন হালদার জানান, সুদে টাকা নিয়ে তিনি চার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন। ফলন ভালো হলেও ধান ঘরে তোলার আগেই মাঠে এসে হাজির হয় মহাজন। বাধ্য হয়ে ৯০০ টাকা মন দরে ধান বিক্রি করতে হয় ফড়িয়াদের কাছে।

এদিকে উপজেলা সদরের চাল ব্যবসায়ী মো. আবু তাহের জানান, প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান বোঝাই অসংখ্য পরিবহন সরাসরি চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অটো রাইস মিলে। উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক রাজু চৌধুরীও বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কোনো ধরনের বিধিনিষেধ না থাকায় কৃষকদের দুরবস্থার সুযোগ নিচ্ছে সিন্ডিকেট চক্র।

এভাবে নতুন বোরো ধান ট্রাকে করে এলাকার বাইরে চলে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক পুরবী রানী বালা বলেন, “আগামীকাল উপজেলা পরিষদের মিটিং রয়েছে। তারপর থেকেই সরকারি ধান-চাল ক্রয় কার্যক্রম শুরু হবে।”

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি দামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু না করলে তারা প্রতিবছরই এমন অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়বেন।