ঢাকা ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তেরখাদায় গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার – ৩ জন

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: চেকপোস্ট

তেরখাদা উপজেলার বিজয় নগর এলাকার কলাবাগান থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম সখিরন বেগম ময়না (৪০)। দুই বছর প্রবাস জীবন থেকে পাঠানো অর্থ শ্বশুরবাড়ি ফিরে স্বামীর কাছে ফেরত চাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে। তিনি নড়াইল কালিয়া উপজেলার হরিসপুর গ্রামের রহিম সরদারের ছেলে মোঃ আনিচ সরদারের স্ত্রী।

গত ২৩ মার্চ সকালে তেরখাদা উপজেলার বিজয় নগর এলাকার ওসমান মিয়ার কলাবাগান থেকে ময়নার লাশটি উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে হত্যা মামলায় নড়াইলের কালিয়া উপজেলার হাড়িভাঙ্গা গ্রামের মৃত রহিম সরদারের ছেলে রনিচ সরদার (৪০), আকছের (৫৫) এবং রহিম সরদারের দ্বিতীয় স্ত্রী আঙ্গুরা বেগম (৩০) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া, অন্য তিনজনকে ১৫১ ধারায় গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আনিচ সরদারের সাথে বিয়ের পর থেকেই সখিরন বেগম (ময়না) খুলনায় বসবাস করতেন। অপরদিকে, আনিচ সরদার তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে হরিসপুরে বসবাস করতেন। আনিচ সরদার দ্বিতীয় বিয়ে করার পর সখিরন বেগম ময়না বিদেশ চলে যান।

দুই বছর প্রবাসে থাকাকালীন সখিরন বেগমের আয়ের সব টাকা স্বামী আনিচ সরদারের কাছে পাঠিয়েছিলেন। সখিরন বেগম দেশে ফিরে তার পাঠানো টাকা স্বামী আনিচের কাছে ফেরত চাইলে বাঁধে বিপত্তি।

সর্বশেষ ২২ মার্চ বিকালে সখিরন বেগম ময়না তার পাওনা টাকা চাইতে স্বামীর বাড়ি হরিসপুর গ্রামে যান। টাকা চাইলে সখিরনের উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। আনিচ সরদার, তার ভাই রনিচ সরদার এবং তার পরিবারের সদস্যরা সখিরন বেগমকে বেদম মারধর করে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করতে নড়াইলের সীমানা ছাড়িয়ে তেরখাদা উপজেলার বিজয় নগর এলাকার ওসমান মিয়ার কলাবাগানের মধ্যে ফেলে রেখে যায়।

সকালে এলাকাবাসী লাশ দেখে পুলিশকে খবর দিলে সখিরনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় হত্যা মামলা হয়েছে (মামলা নং – ১৩, তারিখ : ২৩/৩/২৫ ইং)।

এ বিষয়ে তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, আসামিরা দুর্ধর্ষ প্রকৃতির। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় নানাবিধ অপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগ রয়েছে। হত্যার প্রধান আসামি নিহত ময়নার স্বামী আনিচ সরদারকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০২:৩১:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
৫৩৫ বার পড়া হয়েছে

তেরখাদায় গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার – ৩ জন

আপডেট সময় ০২:৩১:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

তেরখাদা উপজেলার বিজয় নগর এলাকার কলাবাগান থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম সখিরন বেগম ময়না (৪০)। দুই বছর প্রবাস জীবন থেকে পাঠানো অর্থ শ্বশুরবাড়ি ফিরে স্বামীর কাছে ফেরত চাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে। তিনি নড়াইল কালিয়া উপজেলার হরিসপুর গ্রামের রহিম সরদারের ছেলে মোঃ আনিচ সরদারের স্ত্রী।

গত ২৩ মার্চ সকালে তেরখাদা উপজেলার বিজয় নগর এলাকার ওসমান মিয়ার কলাবাগান থেকে ময়নার লাশটি উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে হত্যা মামলায় নড়াইলের কালিয়া উপজেলার হাড়িভাঙ্গা গ্রামের মৃত রহিম সরদারের ছেলে রনিচ সরদার (৪০), আকছের (৫৫) এবং রহিম সরদারের দ্বিতীয় স্ত্রী আঙ্গুরা বেগম (৩০) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া, অন্য তিনজনকে ১৫১ ধারায় গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আনিচ সরদারের সাথে বিয়ের পর থেকেই সখিরন বেগম (ময়না) খুলনায় বসবাস করতেন। অপরদিকে, আনিচ সরদার তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে হরিসপুরে বসবাস করতেন। আনিচ সরদার দ্বিতীয় বিয়ে করার পর সখিরন বেগম ময়না বিদেশ চলে যান।

দুই বছর প্রবাসে থাকাকালীন সখিরন বেগমের আয়ের সব টাকা স্বামী আনিচ সরদারের কাছে পাঠিয়েছিলেন। সখিরন বেগম দেশে ফিরে তার পাঠানো টাকা স্বামী আনিচের কাছে ফেরত চাইলে বাঁধে বিপত্তি।

সর্বশেষ ২২ মার্চ বিকালে সখিরন বেগম ময়না তার পাওনা টাকা চাইতে স্বামীর বাড়ি হরিসপুর গ্রামে যান। টাকা চাইলে সখিরনের উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। আনিচ সরদার, তার ভাই রনিচ সরদার এবং তার পরিবারের সদস্যরা সখিরন বেগমকে বেদম মারধর করে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করতে নড়াইলের সীমানা ছাড়িয়ে তেরখাদা উপজেলার বিজয় নগর এলাকার ওসমান মিয়ার কলাবাগানের মধ্যে ফেলে রেখে যায়।

সকালে এলাকাবাসী লাশ দেখে পুলিশকে খবর দিলে সখিরনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় হত্যা মামলা হয়েছে (মামলা নং – ১৩, তারিখ : ২৩/৩/২৫ ইং)।

এ বিষয়ে তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, আসামিরা দুর্ধর্ষ প্রকৃতির। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় নানাবিধ অপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগ রয়েছে। হত্যার প্রধান আসামি নিহত ময়নার স্বামী আনিচ সরদারকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।