ঢাকা ০৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় আসছেন ট্রাম্প প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা

চেকপোস্ট ডেস্ক::

চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা ঢাকা সফরে আসছেন। সফরকালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, রোহিঙ্গা সংকট, অভিবাসন, জিএসপি সুবিধা, নির্বাচন পরিস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ সংস্কার—বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল এল. চুলিক আসছেন ১৬ এপ্রিল, আর পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এন্ডু হেরাপ আসছেন ১৭ এপ্রিল। ট্রাম্পের শাসনামলে এটি হচ্ছে প্রথম উচ্চপর্যায়ের সফর।

বাংলাদেশ সফরে আসা এই মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হবে। বর্তমানে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বহাল থাকায় বাংলাদেশের পোশাকশিল্প চাপে রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠিও দিয়েছেন।

সফরে ইউএসএআইডির সাহায্য হ্রাসের ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে উদ্ভূত সমস্যার কথাও তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধে পোশাকশিল্পের উপর প্রভাব নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেবে বাংলাদেশ। এই আলোচনায় মিয়ানমারে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতও অংশ নিতে পারেন বলে জানা গেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সাম্প্রতিক সফর এবং রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির খাদ্য সংকট পরিস্থিতিও আলোচনায় আসতে পারে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে আরাকান আর্মিকে মানবিক সহায়তা দিতে চায়, তবে বাংলাদেশ বিষয়টি কৌশলে বিবেচনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে হাজারের বেশি অবৈধ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে। তবে সম্প্রতি গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের ভারত সফরে সংখ্যালঘু ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পুনরায় ব্যাখ্যা দেবে। বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে, তৃতীয় পক্ষ নয়, বরং সরাসরি ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক জোরদার করা।

মার্কিন কর্মকর্তাদের এই সফর শুধু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়, বরং আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। বিশেষ করে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতি ও যুক্তরাষ্ট্রের বার্মা অ্যাক্ট বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জটিলতা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:০১:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
৫১৯ বার পড়া হয়েছে

ঢাকায় আসছেন ট্রাম্প প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা

আপডেট সময় ১১:০১:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা ঢাকা সফরে আসছেন। সফরকালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, রোহিঙ্গা সংকট, অভিবাসন, জিএসপি সুবিধা, নির্বাচন পরিস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ সংস্কার—বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল এল. চুলিক আসছেন ১৬ এপ্রিল, আর পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এন্ডু হেরাপ আসছেন ১৭ এপ্রিল। ট্রাম্পের শাসনামলে এটি হচ্ছে প্রথম উচ্চপর্যায়ের সফর।

বাংলাদেশ সফরে আসা এই মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হবে। বর্তমানে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বহাল থাকায় বাংলাদেশের পোশাকশিল্প চাপে রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠিও দিয়েছেন।

সফরে ইউএসএআইডির সাহায্য হ্রাসের ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে উদ্ভূত সমস্যার কথাও তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধে পোশাকশিল্পের উপর প্রভাব নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেবে বাংলাদেশ। এই আলোচনায় মিয়ানমারে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতও অংশ নিতে পারেন বলে জানা গেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সাম্প্রতিক সফর এবং রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির খাদ্য সংকট পরিস্থিতিও আলোচনায় আসতে পারে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে আরাকান আর্মিকে মানবিক সহায়তা দিতে চায়, তবে বাংলাদেশ বিষয়টি কৌশলে বিবেচনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে হাজারের বেশি অবৈধ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে। তবে সম্প্রতি গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের ভারত সফরে সংখ্যালঘু ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পুনরায় ব্যাখ্যা দেবে। বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে, তৃতীয় পক্ষ নয়, বরং সরাসরি ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক জোরদার করা।

মার্কিন কর্মকর্তাদের এই সফর শুধু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়, বরং আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। বিশেষ করে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতি ও যুক্তরাষ্ট্রের বার্মা অ্যাক্ট বাস্তবায়ন সংক্রান্ত জটিলতা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।