জার্মানিতে প্রতি পাঁচজনের একজন থাকছেন একা, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সামাজিক চ্যালেঞ্জ
জার্মানিতে একা বসবাসকারীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিস জানিয়েছে, ২০২৩ সালে প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ একা বসবাস করেছেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ২০.৬ শতাংশ—অর্থাৎ প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন।
২০০৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৪০ লাখ। দুই দশকের ব্যবধানে একা বসবাসকারীর সংখ্যা বেড়েছে ২২ শতাংশ। এ হার ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড় (১৬.২ শতাংশ) থেকেও উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ (৩৪ শতাংশ) এবং ৮৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ মানুষ একা থাকেন। শুধু বয়স্করাই নন, ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মধ্যেও ২৮ শতাংশ এখন একা বসবাস করেন।
২০২৪ সালের মাইক্রো-সেন্সাসের প্রাথমিক তথ্য বলছে, একক পরিবারের ২৯ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে রয়েছেন। এটি সাধারণ জনগোষ্ঠীর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়া সত্ত্বেও গত দুই দশকে জার্মানিতে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর ২০২4 সালের মার্চ মাসের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০৫ সালে জার্মানির সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার সংস্কারই এই পরিস্থিতির অন্যতম কারণ। বিশেষ করে নারীরা এর প্রভাব বেশি অনুভব করছেন।
জেন্ডার পেনশন গ্যাপ, অর্থাৎ নারী-পুরুষের পেনশন বৈষম্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। কম মজুরি, ক্যারিয়ার বিরতি ও পারিবারিক দায়িত্বের কারণে নারীরা পেনশন কম পান। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের ৩৮.২ শতাংশ মাসে ১ হাজার ইউরোর কম পেনশন পান।
এই একাকিত্ব ও আর্থিক অনিশ্চয়তা মিলিয়ে জার্মানিতে নারীদের ও প্রবীণদের জন্য নতুন ধরনের সামাজিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
বর্তমানে জার্মানির জনসংখ্যা প্রায় ৮ কোটি ৩৬ লাখ।