ঢাকা ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামালপুরে ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণা: দুই স্বামী-স্ত্রী চক্রের কারসাজি

জাকিরুল ইসলাম বাবু, জামালপুর::

জামালপুর শহরের দরিপাড়া এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করা স্বামী-স্ত্রী (জনি ও লিজা) ভুয়া আইন সহকারী ও সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর জেলা জজ কোর্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিজেদের ‘আইন সহকারী’ পরিচয় দিয়ে চলাফেরা করতেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, প্রথমদিকে তাদের একজন আইন সহকারী হিসেবে দেখা যেত। পরে তারা সাংবাদিক পরিচয়েও প্রতারণায় জড়ায়। এদের সঙ্গে জামালপুর প্রেসক্লাবের এক সহযোগী সদস্যের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেলান্দহের নিরিবিলি হোটেলে তাদের একসঙ্গে দেখা যাওয়ার পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়।

প্রতারণার কৌশল হিসেবে প্রথমে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জামালপুর জেলা কারাগারের এক দুর্নীতির বিষয় ‘বন্ধ’ করে দেওয়ার নামে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছ থেকে টাকা আদায় করে জনি ও লিজা। এরপর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জামালপুর অফিসেও ‘প্রতিবাদ বিজ্ঞাপনের’ কথা বলে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। অফিস কর্তৃপক্ষ পরে প্রকৃত সাংবাদিকের মাধ্যমে প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার পর প্রকৃত সাংবাদিকরা জনি ও লিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে প্রতারকরা হুমকি দেওয়া শুরু করে। জনি ও লিজা ফোনে এবং সামাজিক মাধ্যমে হুমকি দেয়। এমনকি ফেসবুকে হুমকিমূলক স্ট্যাটাসও দেয় তারা।

জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব হাফিজ রায়হান (সাদা) বলেন, “এই প্রতারক দম্পতি আমাদের প্রেসক্লাবের কোনো সদস্য নয়। আমরা তাদের ক্লাবে ঢুকতেও দেব না। চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।”

প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানও একই মন্তব্য করেন।

পরবর্তীতে প্রতারক জনি ও লিজা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করলেও টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ভুক্তভোগী সাংবাদিক জামালপুর সদর থানায় যোগাযোগ করলে ওসি জানান, “এটি চাঁদাবাজির মামলা হয়। থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করুন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো।”

এ বিষয়ে তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগী সাংবাদিক প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:১৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
৫৬৪ বার পড়া হয়েছে

জামালপুরে ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণা: দুই স্বামী-স্ত্রী চক্রের কারসাজি

আপডেট সময় ১১:১৫:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

জামালপুর শহরের দরিপাড়া এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করা স্বামী-স্ত্রী (জনি ও লিজা) ভুয়া আইন সহকারী ও সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর জেলা জজ কোর্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিজেদের ‘আইন সহকারী’ পরিচয় দিয়ে চলাফেরা করতেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, প্রথমদিকে তাদের একজন আইন সহকারী হিসেবে দেখা যেত। পরে তারা সাংবাদিক পরিচয়েও প্রতারণায় জড়ায়। এদের সঙ্গে জামালপুর প্রেসক্লাবের এক সহযোগী সদস্যের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেলান্দহের নিরিবিলি হোটেলে তাদের একসঙ্গে দেখা যাওয়ার পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়।

প্রতারণার কৌশল হিসেবে প্রথমে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জামালপুর জেলা কারাগারের এক দুর্নীতির বিষয় ‘বন্ধ’ করে দেওয়ার নামে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছ থেকে টাকা আদায় করে জনি ও লিজা। এরপর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জামালপুর অফিসেও ‘প্রতিবাদ বিজ্ঞাপনের’ কথা বলে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। অফিস কর্তৃপক্ষ পরে প্রকৃত সাংবাদিকের মাধ্যমে প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার পর প্রকৃত সাংবাদিকরা জনি ও লিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে প্রতারকরা হুমকি দেওয়া শুরু করে। জনি ও লিজা ফোনে এবং সামাজিক মাধ্যমে হুমকি দেয়। এমনকি ফেসবুকে হুমকিমূলক স্ট্যাটাসও দেয় তারা।

জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব হাফিজ রায়হান (সাদা) বলেন, “এই প্রতারক দম্পতি আমাদের প্রেসক্লাবের কোনো সদস্য নয়। আমরা তাদের ক্লাবে ঢুকতেও দেব না। চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।”

প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানও একই মন্তব্য করেন।

পরবর্তীতে প্রতারক জনি ও লিজা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করলেও টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ভুক্তভোগী সাংবাদিক জামালপুর সদর থানায় যোগাযোগ করলে ওসি জানান, “এটি চাঁদাবাজির মামলা হয়। থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করুন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো।”

এ বিষয়ে তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগী সাংবাদিক প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন।