ঢাকা ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জয়পুরহাটের রাকিবুলের শরীরে লাগে ৬৫টি ছররা গুলি, দেখতে পাচ্ছেন না ডান চোখে

সুকমল চন্দ্র বর্মন কালাই, জয়পুরহাট::

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে রাকিবুল ইসলামের (২৫) শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৬৫টি ছররা গুলি লেগেছিল। চিকিৎসার পরও তাঁর ডান চোখ ভালো হয়নি। এখন তিনি ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। বাঁ চোখেও ঝাপসা দেখছেন। বিদেশে গিয়ে চোখের চিকিৎসা করাতে চাচ্ছেন। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না।

রাকিবুল ইসলাম জয়পুরহাট পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফেসরপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বাবা মোকলেছুর রহমান খাবার হোটেলের কর্মচারী।

রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছয় মাস আগে বিয়ে করেছি। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মেট্রো টেক্সটাইল লিমিটেডে অপারেটর পদে চাকরি করতাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে এসেছি। বন্ধুদের সঙ্গে গত ৪ আগস্ট জয়পুরহাট শহরের পাঁচুর মোড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়েছিলাম। দুপুর ১২টার পর পুলিশের সঙ্গে আমাদের সংর্ঘষ হয়। এ সময় আমার শরীরে ছররা গুলি লাগে। আমি গুলিবিদ্ধ হয়ে সড়কের ওপর পড়ে যাই। লোকজন আমাকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে আনার পর আমার জ্ঞান ফিরে আসে। তখন ডান চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। চিকিৎসকের পরামর্শে ওই দিন রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে আমাকে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ২০ দিন চিকিৎসাধীন ছিলাম।’

রাকিবুল ইসলাম বলেন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার পর বাঁ চোখ একটু দেখতে পাচ্ছেন। তবে ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা করা গেলে হয়তো চোখ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে তাঁর হোটেলের কর্মচারী বাবার পক্ষে সেই খরচ জোগানো সম্ভব না। ধারদেনা করে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

রাকিবুল ইসলামের বাবা মোকলেছুর রহমান বলেন, চিকিৎসকেরা ছেলেকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে বলেছেন। ছেলের আয়ে সংসার চলেছে। এখন ছেলের চাকরি নেই। তাঁর নিজের কাজও বন্ধ। এখন সংসার চলানোই দায় হয়ে পড়েছে। ছেলের চিকিৎসা করানোর টাকা পাবেন কোথায়, তা নিয়ে তিনি চিন্তিত।

প্রতিবেশী ও জয়পুরহাট আদালতের আইনজীবী এ টি এম মিজানুর রহমান বলেন, পরিবারটির আর্থিক অবস্থা ভালো না। সরকারের কাছে তিনি রাকিবুলের সুচিকিৎসার দাবি জানান।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৬:৪০:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫০৫ বার পড়া হয়েছে

জয়পুরহাটের রাকিবুলের শরীরে লাগে ৬৫টি ছররা গুলি, দেখতে পাচ্ছেন না ডান চোখে

আপডেট সময় ০৬:৪০:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে রাকিবুল ইসলামের (২৫) শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৬৫টি ছররা গুলি লেগেছিল। চিকিৎসার পরও তাঁর ডান চোখ ভালো হয়নি। এখন তিনি ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। বাঁ চোখেও ঝাপসা দেখছেন। বিদেশে গিয়ে চোখের চিকিৎসা করাতে চাচ্ছেন। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না।

রাকিবুল ইসলাম জয়পুরহাট পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফেসরপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বাবা মোকলেছুর রহমান খাবার হোটেলের কর্মচারী।

রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছয় মাস আগে বিয়ে করেছি। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মেট্রো টেক্সটাইল লিমিটেডে অপারেটর পদে চাকরি করতাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে এসেছি। বন্ধুদের সঙ্গে গত ৪ আগস্ট জয়পুরহাট শহরের পাঁচুর মোড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়েছিলাম। দুপুর ১২টার পর পুলিশের সঙ্গে আমাদের সংর্ঘষ হয়। এ সময় আমার শরীরে ছররা গুলি লাগে। আমি গুলিবিদ্ধ হয়ে সড়কের ওপর পড়ে যাই। লোকজন আমাকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে আনার পর আমার জ্ঞান ফিরে আসে। তখন ডান চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। চিকিৎসকের পরামর্শে ওই দিন রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে আমাকে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ২০ দিন চিকিৎসাধীন ছিলাম।’

রাকিবুল ইসলাম বলেন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার পর বাঁ চোখ একটু দেখতে পাচ্ছেন। তবে ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা করা গেলে হয়তো চোখ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে তাঁর হোটেলের কর্মচারী বাবার পক্ষে সেই খরচ জোগানো সম্ভব না। ধারদেনা করে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

রাকিবুল ইসলামের বাবা মোকলেছুর রহমান বলেন, চিকিৎসকেরা ছেলেকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে বলেছেন। ছেলের আয়ে সংসার চলেছে। এখন ছেলের চাকরি নেই। তাঁর নিজের কাজও বন্ধ। এখন সংসার চলানোই দায় হয়ে পড়েছে। ছেলের চিকিৎসা করানোর টাকা পাবেন কোথায়, তা নিয়ে তিনি চিন্তিত।

প্রতিবেশী ও জয়পুরহাট আদালতের আইনজীবী এ টি এম মিজানুর রহমান বলেন, পরিবারটির আর্থিক অবস্থা ভালো না। সরকারের কাছে তিনি রাকিবুলের সুচিকিৎসার দাবি জানান।