ঢাকা ০২:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জঙ্গি সন্দেহে ৫ বছর কারাবন্দী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী, মুক্তির দাবি

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: চেকপোস্ট

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থী, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মাদ অনিক এবং পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের মো: মোজাহিদুল ইসলাম রাফি, দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে জঙ্গি সন্দেহে কারাবন্দী রয়েছেন। তাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ (১২ মার্চ) দুপুরে খুবির হাদী চত্বরে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ঈদের আগে তাদের মুক্তি দেওয়ার জোর দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দেন, যদি দ্রুত মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হবে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ হন অনিক ও রাফি। অনিককে হলের অফিস ক্লার্ক এনামুল ডেকে নিয়ে গল্লামারী ঘোষ ডেয়ারির সামনে পুলিশের হাতে তুলে দেন। অন্যদিকে, রাফিকে তার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়, যেখানে তিনি স্ত্রীসহ বসবাস করতেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ১৭ দিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখার পর ২৫ জানুয়ারি আদালতে হাজির করা হয় তাদের। এ সময় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক সাতটি মামলা দায়ের করে, যার মধ্যে আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার অভিযোগও রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, ওই সময়ে খুলনায় কোনো বোমা হামলার ঘটনা ঘটেনি।

বক্তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষিত তরুণদের কণ্ঠ রোধ করতে বারবার ‘জঙ্গি নাটক’ সাজিয়ে নিরীহদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তারা জানান, সৈরাচারী সরকারের পতনের পর গত সেপ্টেম্বর ও নভেম্বরে অনিক ও রাফি কারাগারে অনশন করেছিলেন, কিন্তু তাতেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অন্যায়ভাবে তাদের ছাত্রত্ব স্থগিত করে এবং কোনো আইনি সহায়তা দেয়নি। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচারও দাবি করেন।

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. নুরুন্নবী, ব্যবসা প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ নুর আলম, প্রধান প্রফেসর শেখ মাহমুদুল হাসান, আইকিউএসি পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর সামিউল হক, এইচআরএম ডিসিপ্লিনের শিক্ষক মেহেদী হাসান, মানব সম্পদ ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহমাদ উল্লাহ সাধীন, ১৮ ব্যাচের মিনহাজুল আবেদিন সম্পদ, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের টিপু তমিজ প্রমুখ।

শিক্ষার্থীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের মুক্তির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং তাদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৭:১০:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
৫৩০ বার পড়া হয়েছে

জঙ্গি সন্দেহে ৫ বছর কারাবন্দী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী, মুক্তির দাবি

আপডেট সময় ০৭:১০:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থী, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মাদ অনিক এবং পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের মো: মোজাহিদুল ইসলাম রাফি, দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে জঙ্গি সন্দেহে কারাবন্দী রয়েছেন। তাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ (১২ মার্চ) দুপুরে খুবির হাদী চত্বরে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ঈদের আগে তাদের মুক্তি দেওয়ার জোর দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দেন, যদি দ্রুত মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হবে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ হন অনিক ও রাফি। অনিককে হলের অফিস ক্লার্ক এনামুল ডেকে নিয়ে গল্লামারী ঘোষ ডেয়ারির সামনে পুলিশের হাতে তুলে দেন। অন্যদিকে, রাফিকে তার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়, যেখানে তিনি স্ত্রীসহ বসবাস করতেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ১৭ দিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখার পর ২৫ জানুয়ারি আদালতে হাজির করা হয় তাদের। এ সময় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক সাতটি মামলা দায়ের করে, যার মধ্যে আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার অভিযোগও রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, ওই সময়ে খুলনায় কোনো বোমা হামলার ঘটনা ঘটেনি।

বক্তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষিত তরুণদের কণ্ঠ রোধ করতে বারবার ‘জঙ্গি নাটক’ সাজিয়ে নিরীহদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তারা জানান, সৈরাচারী সরকারের পতনের পর গত সেপ্টেম্বর ও নভেম্বরে অনিক ও রাফি কারাগারে অনশন করেছিলেন, কিন্তু তাতেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অন্যায়ভাবে তাদের ছাত্রত্ব স্থগিত করে এবং কোনো আইনি সহায়তা দেয়নি। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচারও দাবি করেন।

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. নুরুন্নবী, ব্যবসা প্রশাসন ডিসিপ্লিনের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ নুর আলম, প্রধান প্রফেসর শেখ মাহমুদুল হাসান, আইকিউএসি পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর সামিউল হক, এইচআরএম ডিসিপ্লিনের শিক্ষক মেহেদী হাসান, মানব সম্পদ ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহমাদ উল্লাহ সাধীন, ১৮ ব্যাচের মিনহাজুল আবেদিন সম্পদ, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের টিপু তমিজ প্রমুখ।

শিক্ষার্থীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের মুক্তির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং তাদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেবে।