ঢাকা ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাত্রদের বিনা লাভের দোকানে নিম্নবিত্ত মানুষের সস্তি

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: চেকেপাস্ট

খুলনা নগরীর শিববাড়ি মোড়ে “বিনা লাভের দোকান” নামে একটি উদ্যোগ গড়ে উঠেছে, যা নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য স্বস্তির কারণ হয়েছে। গতকাল বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একদল ছাত্র স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে চিড়া, মুড়ি, সয়াবিন তেল, আলু, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য বিক্রি করছেন। দোকানের ব্যানারে লেখা – “পবিত্র মাহে রমজানে জনমনে সস্তি ও বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বিনা লাভের দোকান। কেনা দামে পণ্য বিক্রি।” উদ্যোগটি নিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও টাস্কফোর্স টিম, খুলনা।

এই দোকানে মোট ১৬ ধরনের পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা কোনো লাভ না রেখে শুধুমাত্র পরিবহন খরচসহ ন্যায্য দামে পণ্য বিক্রি করছেন। কিছু পণ্যের দাম নিম্নরূপ-

আলু – ১৭ টাকা/কেজি, দেশি পেঁয়াজ – ৩৫ টাকা/কেজি, শসা – ২৫ টাকা/কেজি, বেগুন – ৫০ টাকা/কেজি, ছোলা – ৯৫ টাকা/কেজি, মুড়ি – ৬৫ টাকা/কেজি, বেসন – ৬০ টাকা/কেজি, চিঁড়া – ৬০ টাকা/কেজি, টমেটো – ৭.৫ টাকা/কেজি, কাঁচামরিচ – ৪০ টাকা/কেজি, রসুন – ১০০ টাকা/কেজি, ডিম – ১০ টাকা/পিস, সয়াবিন তেল (১ লিটার বোতল) – ১৭৫ টাকা, লেবু – ২৭ টাকা/হালি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনার বাজার নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য হৃদয় ঘরামী জানান, গত অক্টোবরে তারা নগরীর বিভিন্ন জায়গায় “বিনা লাভের দোকান” চালু করেছিলেন এবং ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলেন। রমজানে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়, তাই তারা আবার এ উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রথমে শিববাড়ি মোড়ে দোকান চালু করা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি পয়েন্টে চালু করা হবে এবং রমজানজুড়ে এ কার্যক্রম চলবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বাজার মনিটরিং কন্ট্রোল টিমের সদস্য সাঈম মল্লিক, আরিফুল ইসলাম সানি ও রাইসা ইসলাম বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি হয়। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম কমানো না গেলে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা নিজেদের টাকায় পণ্য কিনে এনে বিক্রি করছেন এবং কোনো অনুদান গ্রহণ করেননি।

একজন ইজিবাইক চালক মিঠুন হোসেন বলেন, “বাজারের তুলনায় এখানে অনেক কম দামে জিনিস পাওয়া যাচ্ছে। নগরীর আরও কিছু জায়গায় এ ধরনের দোকান চালু হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।”

একটি বেসরকারি মোবাইল কোম্পানির বিক্রয় কর্মী মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমি পাঁচটি পণ্য কিনেছি। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ। তবে আরও কিছু পণ্য এবং বিক্রির পয়েন্ট বৃদ্ধি করা হলে ভালো হবে।”

শিক্ষার্থীদের এ মহৎ উদ্যোগ জনসাধারণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তাদের প্রচেষ্টায় রমজানে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৯:০৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
৫২৯ বার পড়া হয়েছে

ছাত্রদের বিনা লাভের দোকানে নিম্নবিত্ত মানুষের সস্তি

আপডেট সময় ০৯:০৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

খুলনা নগরীর শিববাড়ি মোড়ে “বিনা লাভের দোকান” নামে একটি উদ্যোগ গড়ে উঠেছে, যা নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য স্বস্তির কারণ হয়েছে। গতকাল বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একদল ছাত্র স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে চিড়া, মুড়ি, সয়াবিন তেল, আলু, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য বিক্রি করছেন। দোকানের ব্যানারে লেখা – “পবিত্র মাহে রমজানে জনমনে সস্তি ও বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বিনা লাভের দোকান। কেনা দামে পণ্য বিক্রি।” উদ্যোগটি নিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও টাস্কফোর্স টিম, খুলনা।

এই দোকানে মোট ১৬ ধরনের পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা কোনো লাভ না রেখে শুধুমাত্র পরিবহন খরচসহ ন্যায্য দামে পণ্য বিক্রি করছেন। কিছু পণ্যের দাম নিম্নরূপ-

আলু – ১৭ টাকা/কেজি, দেশি পেঁয়াজ – ৩৫ টাকা/কেজি, শসা – ২৫ টাকা/কেজি, বেগুন – ৫০ টাকা/কেজি, ছোলা – ৯৫ টাকা/কেজি, মুড়ি – ৬৫ টাকা/কেজি, বেসন – ৬০ টাকা/কেজি, চিঁড়া – ৬০ টাকা/কেজি, টমেটো – ৭.৫ টাকা/কেজি, কাঁচামরিচ – ৪০ টাকা/কেজি, রসুন – ১০০ টাকা/কেজি, ডিম – ১০ টাকা/পিস, সয়াবিন তেল (১ লিটার বোতল) – ১৭৫ টাকা, লেবু – ২৭ টাকা/হালি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনার বাজার নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য হৃদয় ঘরামী জানান, গত অক্টোবরে তারা নগরীর বিভিন্ন জায়গায় “বিনা লাভের দোকান” চালু করেছিলেন এবং ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলেন। রমজানে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়, তাই তারা আবার এ উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রথমে শিববাড়ি মোড়ে দোকান চালু করা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি পয়েন্টে চালু করা হবে এবং রমজানজুড়ে এ কার্যক্রম চলবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বাজার মনিটরিং কন্ট্রোল টিমের সদস্য সাঈম মল্লিক, আরিফুল ইসলাম সানি ও রাইসা ইসলাম বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি হয়। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম কমানো না গেলে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা নিজেদের টাকায় পণ্য কিনে এনে বিক্রি করছেন এবং কোনো অনুদান গ্রহণ করেননি।

একজন ইজিবাইক চালক মিঠুন হোসেন বলেন, “বাজারের তুলনায় এখানে অনেক কম দামে জিনিস পাওয়া যাচ্ছে। নগরীর আরও কিছু জায়গায় এ ধরনের দোকান চালু হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।”

একটি বেসরকারি মোবাইল কোম্পানির বিক্রয় কর্মী মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমি পাঁচটি পণ্য কিনেছি। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ। তবে আরও কিছু পণ্য এবং বিক্রির পয়েন্ট বৃদ্ধি করা হলে ভালো হবে।”

শিক্ষার্থীদের এ মহৎ উদ্যোগ জনসাধারণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তাদের প্রচেষ্টায় রমজানে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছে।