চিরিরবন্দরে অভিনব উদ্যোগ: ঘানি টানছে ঘোড়া
চিরিরবন্দর উপজেলার চিরিরবন্দর গ্রামে দেখা গেছে এক নতুন এবং ব্যতিক্রমী দৃশ্য। কাঠের তৈরি সরিষার তেলের ঘানি টানছে ঘোড়া। গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে ঘানি টানানোর এই পদ্ধতি শুধু সময় সাশ্রয়ী নয়, বরং খরচ কমানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের চিরিরবন্দর গ্রামের বাসিন্দা মো. আলতাফ হোসেন তার পূর্বপুরুষদের গরু দিয়ে তেল তৈরির ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে ঘোড়া ব্যবহার শুরু করেছেন। ইউটিউব দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি গরু বিক্রি করে একটি ঘোড়া কিনে ঘানিতে যুক্ত করেন। তার এ উদ্যোগ স্থানীয়ভাবে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের তেল পাওয়া যায়। তবে খাঁটি এবং বিশুদ্ধ সরিষার তেলের চাহিদা সব সময়ই বেশি। সরিষার তেল শুধু খাবার হিসেবে নয়, রূপচর্চা এবং স্বাস্থ্যসেবাতেও বহুল ব্যবহৃত। স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা দাবি করেন, ঘানিতে তৈরি তেলের স্বাদ, রং এবং ঘ্রাণ অত্যন্ত খাঁটি।
বেলতলী বাজারের তেল ব্যবসায়ী রাসেল আহমেদ বলেন, “ঘানিতে তৈরি তেলের স্বাদ দোকানের তেলের তুলনায় অনেক ভালো। ১০ কেজি সরিষা থেকে প্রায় তিন থেকে সোয়া তিন লিটার তেল উৎপাদিত হয়, যা স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি অনলাইনেও বিক্রি হচ্ছে।”
সূখীপীর বাজারের তেল ব্যবসায়ী মসলেম উদ্দিন জানান, “কাঠের ঘানিতে তৈরি তেল এবং খৈল অত্যন্ত ভালো মানের। এই পদ্ধতিতে ভেজাল মেশানোর সুযোগ নেই এবং লোহার ঘানির তুলনায় তেলের গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে।”
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শহীদুল আলম জানান, “এই উদ্যোগ স্থানীয়ভাবে নতুন সম্ভাবনার পথ খুলে দিয়েছে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘানি মালিকদের আরও উৎসাহিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আলতাফ হোসেনের এই উদ্ভাবন শুধু তার ব্যক্তিগত আয়ের পথ খুলে দেয়নি, বরং চিরিরবন্দরে খাঁটি সরিষার তেল উৎপাদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এটি সময় সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি যা স্থানীয় কৃষি এবং উদ্যোক্তাদের জন্য এক নতুন অনুপ্রেরণা।”