গাজায় ইসরায়েলি হামলা, একই পরিবারের ৬ জনসহ নিহত ২৪
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর টানা হামলায় মৃত্যু মিছিলে যোগ হচ্ছে আরও প্রাণ। সর্বশেষ একাধিক হামলায় একই পরিবারের ৬ সদস্যসহ ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে চলমান আগ্রাসনে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দিনভর গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে বেইত লাহিয়ায় একটি বাড়িতে হামলায় একই পরিবারের ছয়জন নিহত হন। গাজা শহরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি আশ্রয় কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো হামলায় আরও চারজন প্রাণ হারান।
চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আরেকটি হামলায় এক সাবেক পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়ও নিহত হয়েছেন। এছাড়া তাল আল-হাওয়া এলাকায় কাঠ সংগ্রহ করতে আসা কয়েকজনের ওপর চালানো ড্রোন হামলায় আরও দুইজন নিহত ও অনেকে আহত হন।
খান ইউনিস ও আল-মাওয়াসি এলাকায় হামলায় এক শিশুসহ ছয়জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত পরিবারভুক্ত। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে চালানো গোলাবর্ষণে আরও একজন নিহত হয়েছেন।
এদিকে, গাজা শহরের উপকূলীয় অঞ্চল এবং মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবির, রাফাহ শহর, এবং আশপাশের এলাকায় গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। তবে কিছু এলাকায় হতাহতদের বিষয়ে এখনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে চালানো ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১,৪০০ জন এবং আহত হয়েছেন ৩,৬০০ জনের বেশি।
উল্লেখ্য, চলমান এই আগ্রাসন চলতি বছরের জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে পুরোপুরি লঙ্ঘন করেছে। গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মতানৈক্যের জেরে গেল মাসে ফের শুরু হয় ইসরায়েলি হামলা। যুদ্ধবিরতির পর শান্তির আশায় থাকা গাজাবাসীর জীবনে ফের নেমে আসে মৃত্যুর ছায়া।
এর আগে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
বর্তমানে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে মামলার মুখোমুখি হলেও আক্রমণ থেমে নেই। বিশ্বজুড়ে নিন্দা জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। গাজায় প্রতিদিনই নিহতের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নাম, আহতদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।