খুলনা বিভাগের ২৭টি আয়কর অফিসে কলম বিরতিতে অচলাবস্থা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদে খুলনা বিভাগের ২৭টি আয়কর অফিসে কলম বিরতি পালন করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে সৃষ্টি হয়েছে কার্যত অচলাবস্থা। প্রতিদিন গড়ে ৪-৫ শতাধিক সেবাপ্রার্থী সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে খুলনা অঞ্চলের কর কমিশনার, ৪টি রেঞ্জ এবং ২২টি সার্কেল অফিসের মোট ১৬২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কলম বিরতি পালন করেন। আগের দিন বুধবারও একই কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী শনিবার (১৭ মে) একই সময়সূচিতে আবারও কলম বিরতি পালন করা হবে।
কলম বিরতির অংশ হিসেবে দুপুরে খুলনা কর কমিশনার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন কর্মকর্তারা। তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন আয়কর আইনজীবীরাও।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কর কমিশনার আরিফুল হক, যুগ্ম কর কমিশনার মো. রাউফুর রহমান, উপ কর কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান, মোসা. জেসমিন আক্তার, দেলোয়ারা জাহান, নুসরাত ফারজানা প্রমুখ।
আন্দোলনরত কর্মকর্তারা বলেন, “সরকার টেকসই রাজস্ব সংস্কারের কথা বললেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন আয়কর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের মতামত গ্রহণ করা হয়নি। রাজস্ব অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এনবিআর বিলুপ্ত করার যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা দেশের রাজস্ব ব্যবস্থায় বিপর্যয় ডেকে আনবে।”
তারা আরও জানান, সুপারিশমালার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ না করে এবং আলোচনার সুযোগ না দিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করে গৃহীত হয়েছে।
দুপুরে নগরীর বয়রা এলাকায় কর কমিশনার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো ধরনের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করছেন না। আয়কর সংক্রান্ত সেবা না পেয়ে ফিরে যান ইসমাইল হোসেন ও সাখাওয়াত মোড়ল নামে দুই সেবাগ্রহীতা।
তারা বলেন, “এখানে যে কলম বিরতি চলছে তা আমাদের জানা ছিল না। এখন কাজ না হওয়ায় পরে আবার আসতে হবে।”
আন্দোলন চলমান থাকলে রাজস্ব প্রশাসনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।