ঢাকা ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনা ওয়াসার বোতলজাত পানিতে আয়ের তুলনায় ব্যয় দ্বিগুণ

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: চেকপোস্ট

খুলনা ওয়াসার বোতলজাত পানির প্লান্টে বার্ষিক আয়ের তুলনায় ব্যয় দ্বিগুণের বেশি। গত পাঁচ বছরে প্লান্ট থেকে আয় হয়েছে ১ কোটি ২২ হাজার টাকা, তবে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ টাকা। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত খোদ খুলনা ওয়াসার কর্মকর্তারা। বিকল্প ব্যবস্থা কী করা যায়, ভাবছেন তারা।

খুলনা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় নগরীর রায়েরমহল এলাকায় বোতল ওয়াটার প্লান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০১৯ সালের জুনে শেষ হয়। প্লান্টটির নির্মাণে ব্যয় হয় ১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০২০ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে প্লান্টে পানি উৎপাদন শুরু হয়। “সুন্দরবন পিওয় ড্রিংকিং ওয়াটার” নামে এই প্লান্ট থেকে ৩০০ মিলিলিটার, ৫০০ মিলিলিটার, ১ লিটার, ২ লিটার, ৩ লিটার এবং ৫ লিটার বোতলে পানি উৎপাদন করা হয়। ডিলাররা সরাসরি প্লান্ট থেকে পানি কিনে নিয়ে যায় এবং গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী গাড়িতে করে পানি পৌঁছে দেওয়া হয়।

প্লান্টের আয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী- ২০২০-২১ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ২৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ১৩ লাখ ৮১ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৩৬ লাখ ২ হাজার টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ২৯ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৩৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৭০ লাখ ৭২ হাজার টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে আয় হয়েছিল ১৪ লাখ ১ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৩৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

এভাবে গত ৫ বছরে মোট আয় হয়েছিল ১ কোটি ২২ হাজার ১৮৫ টাকা, কিন্তু উৎপাদন ও ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনসহ মোট ব্যয় হয়েছিল ২ কোটি ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৪ টাকা। এর ফলে লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ১৪ হাজার ৪০৯ টাকা।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাড: বাবুল হাওলাদার বলেন, “যেখানে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো লাভ করছে, সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের কারণ কী? আমাদের ধারণা, ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকার কারণে লোকসান হচ্ছে।”

খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, “অব্যবস্থাপনা, মনিটরিংয়ের অভাব এবং উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটি লোকসান গুনছে। লোকসান বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষের অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হুসাইন শওকত বলেন, “বিষয়টি আমারও নজরে এসেছে। উৎপাদন ব্যয় কমাতে উদ্যোগ নিচ্ছি। এছাড়া অতিরিক্ত জনবল আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবো।”

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:০২:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫
৫১৯ বার পড়া হয়েছে

খুলনা ওয়াসার বোতলজাত পানিতে আয়ের তুলনায় ব্যয় দ্বিগুণ

আপডেট সময় ১১:০২:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

খুলনা ওয়াসার বোতলজাত পানির প্লান্টে বার্ষিক আয়ের তুলনায় ব্যয় দ্বিগুণের বেশি। গত পাঁচ বছরে প্লান্ট থেকে আয় হয়েছে ১ কোটি ২২ হাজার টাকা, তবে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ টাকা। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত খোদ খুলনা ওয়াসার কর্মকর্তারা। বিকল্প ব্যবস্থা কী করা যায়, ভাবছেন তারা।

খুলনা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় নগরীর রায়েরমহল এলাকায় বোতল ওয়াটার প্লান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২০১৯ সালের জুনে শেষ হয়। প্লান্টটির নির্মাণে ব্যয় হয় ১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০২০ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে প্লান্টে পানি উৎপাদন শুরু হয়। “সুন্দরবন পিওয় ড্রিংকিং ওয়াটার” নামে এই প্লান্ট থেকে ৩০০ মিলিলিটার, ৫০০ মিলিলিটার, ১ লিটার, ২ লিটার, ৩ লিটার এবং ৫ লিটার বোতলে পানি উৎপাদন করা হয়। ডিলাররা সরাসরি প্লান্ট থেকে পানি কিনে নিয়ে যায় এবং গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী গাড়িতে করে পানি পৌঁছে দেওয়া হয়।

প্লান্টের আয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী- ২০২০-২১ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ২৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ১৩ লাখ ৮১ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৩৬ লাখ ২ হাজার টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ২৯ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৩৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৭০ লাখ ৭২ হাজার টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে আয় হয়েছিল ১৪ লাখ ১ হাজার টাকা, ব্যয় হয়েছিল ৩৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।

এভাবে গত ৫ বছরে মোট আয় হয়েছিল ১ কোটি ২২ হাজার ১৮৫ টাকা, কিন্তু উৎপাদন ও ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনসহ মোট ব্যয় হয়েছিল ২ কোটি ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৪ টাকা। এর ফলে লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ১৪ হাজার ৪০৯ টাকা।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাড: বাবুল হাওলাদার বলেন, “যেখানে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো লাভ করছে, সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের কারণ কী? আমাদের ধারণা, ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকার কারণে লোকসান হচ্ছে।”

খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, “অব্যবস্থাপনা, মনিটরিংয়ের অভাব এবং উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটি লোকসান গুনছে। লোকসান বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষের অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হুসাইন শওকত বলেন, “বিষয়টি আমারও নজরে এসেছে। উৎপাদন ব্যয় কমাতে উদ্যোগ নিচ্ছি। এছাড়া অতিরিক্ত জনবল আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবো।”