খুলনায় শিশু অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, গ্রেফতার ৫
খুলনায় মোবাইল গেমস খেলার কথা বলে ১০ বছরের এক শিশুকে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে ৫ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে অপহৃত শিশুটিকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে দিঘলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম শাহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আহাদ মোল্লা (১৯), মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে নাহিদ (১৯), বায়েজিদ বোস্তামি (২২), ফয়সাল শেখ (১৯) ও হাবিব শেখ (২৪)। তাদের কাছ থেকে অপহরণে ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
অপহৃত শিশুর মা মুনজিলা বেগম দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, গ্রেফতারকৃত আসামিরা তার একই গ্রামের প্রতিবেশী। তার পুত্র ওয়ালিদ শেখ প্রতিদিনের মতো ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে স্থানীয় হরিপদ মাঠে খেলা করতে যায়। কিন্তু খেলা শেষে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
রাত আনুমানিক ৮টা ২৬ মিনিটে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে ঢাকায় অবস্থানরত তার দেবর মিকাইলের মোবাইল নম্বরে কল করে অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায়, ওয়ালিদকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। মিকাইল বিষয়টি শিশুটির মাকে জানান। এরপর দ্রুত দিঘলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, শিশুটিকে মোবাইল গেমস খেলার কথা বলে বারাকপুর পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অপহরণকারীরা শিশুটির পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহরণের ঘটনার পর দিঘলিয়া থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে বারাকপুর ইউনিয়নের আড়ুয়া ফেরিঘাট এলাকা থেকে অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং আহাদ মোল্লা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। পরবর্তী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে বারাকপুর ও আশপাশের এলাকা থেকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়।
অপহৃত শিশুর মা মুনজিলা বেগম বাদী হয়ে দিঘলিয়া থানায় শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারকৃত ৫ যুবককে আদালতে সোপর্দ করা হলে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
দিঘলিয়া থানার ওসি এইচ এম শাহিন জানান, অপহরণের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। তারা মোবাইল গেমসের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে ফাঁদে ফেলে। তদন্ত চলছে এবং অপরাধীদের কঠোর শাস্তির জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।