খুলনায় ত্রিভুজ প্রেমের বলি: তাজকির হত্যার রহস্য উন্মোচিত
খুলনায় আলোচিত ত্রিভুজ প্রেমের বলি হওয়া তাজকির আহমেদ হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে কেএমপি খালিশপুর থানা পুলিশ। আজ ১৭ মার্চ সকাল ১১টায় কেএমপির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়। পুলিশ জানায়, হত্যার নৃশংসতা যেন সিনেমার কাহিনিকেও হার মানায়।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি জনৈক আসিফ মাহমুদ তার মামাতো ভাই তাজকির আহমেদ নিখোঁজ হয়েছে জানিয়ে খালিশপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং- ১১৫৪, তারিখ – ২২/২/২০২৫) করেন। পরবর্তীতে নিখোঁজ যুবকের পিতা মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ৫ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং – ২২, তারিখ – ২৫/২/২০২৫, ধারা- ৩৬৫/৩৪ পেনাল কোড)।
খালিশপুর থানা পুলিশের চৌকস তদন্ত দল প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে। তদন্তে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে তাজকির আহমেদ তার চাচাতো ভাই রনির শ্যালিকা সিমার সাথে দেখা করতে খুলনায় আসেন। কিন্তু সিমার প্রাক্তন স্বামী ইসমাইল হোসেন অভি বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে।
অভি তার বন্ধুদের সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে তাজকিরকে অপহরণ করে তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে চার বন্ধু মিলে তাজকিরের হাত-পা বেঁধে, মুখে কসটেপ লাগিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে ইজিবাইকে করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
খুলনা পুলিশ ইতোমধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সুরাইয়া আক্তার সীমা, লাবনী বেগম, শহিদুল ইসলাম সাহিদ, মশিউর রহমান জিতু এবং রিয়াদ কাজীসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। তাদের মধ্যে দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুলনায় তাজকির আহমেদের হত্যাকাণ্ড ত্রিভুজ প্রেমের করুণ পরিণতি হিসেবে সমাজের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।