ঢাকা ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুয়েটে নিষিদ্ধই থাকছে ছাত্র রাজনীতি, ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: চেকপোস্ট

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) নিষিদ্ধ থাকছে রাজনীতি। একই সাথে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনসহ ৫টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১১ টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৮তম (জরুরি) সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাসুদ। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রকৌশলী মোঃ আনিসুর রহমান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কুয়েটে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ঘোষিত রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সকল ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ থাকবে এবং তা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে। এছাড়া, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ২০০৩ এর ধারা ৪৪ (৫) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম থেকে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। এ আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী চাকুরিচ্যুতিসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

রাজনীতির সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। এদিকে, মঙ্গলবার সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং একই সাথে সরাসরি জড়িত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

কমিটির সভাপতি হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. এস এম এ হাসেম, সদস্য শহীদ স্মৃতি হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ আবু ইউসুফ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আবু জাকির মোর্শেদ এবং সদস্য সচিব সহকারী পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) শাহ মুহাম্মদ আজমত উল্লাহ। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি পূরণের জন্য বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেওয়া সময়সীমা পার হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন ও বিভিন্ন বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন। শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুর ১টা পর্যন্ত আমাদের আল্টিমেটাম ছিল, কিন্তু প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমাদের দাবি মানা হয়নি, তাই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন ও বিভাগগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি।

৫ দফা দাবিতে আজ সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেন। এই চিকিৎসা কেন্দ্রের দোতলায় চিকিৎসাধীন আছেন উপাচার্য মুহাম্মদ মাসুদ। মঙ্গলবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি সেখানে ভর্তি হন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:৪৪:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৫২৪ বার পড়া হয়েছে

কুয়েটে নিষিদ্ধই থাকছে ছাত্র রাজনীতি, ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন

আপডেট সময় ১০:৪৪:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) নিষিদ্ধ থাকছে রাজনীতি। একই সাথে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনসহ ৫টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১১ টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৮তম (জরুরি) সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাসুদ। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রকৌশলী মোঃ আনিসুর রহমান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কুয়েটে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ঘোষিত রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সকল ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ থাকবে এবং তা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে। এছাড়া, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ২০০৩ এর ধারা ৪৪ (৫) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম থেকে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। এ আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী চাকুরিচ্যুতিসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

রাজনীতির সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। এদিকে, মঙ্গলবার সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং একই সাথে সরাসরি জড়িত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

কমিটির সভাপতি হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. এস এম এ হাসেম, সদস্য শহীদ স্মৃতি হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ আবু ইউসুফ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আবু জাকির মোর্শেদ এবং সদস্য সচিব সহকারী পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) শাহ মুহাম্মদ আজমত উল্লাহ। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি পূরণের জন্য বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেওয়া সময়সীমা পার হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন ও বিভিন্ন বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন। শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুর ১টা পর্যন্ত আমাদের আল্টিমেটাম ছিল, কিন্তু প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমাদের দাবি মানা হয়নি, তাই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন ও বিভাগগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি।

৫ দফা দাবিতে আজ সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেন। এই চিকিৎসা কেন্দ্রের দোতলায় চিকিৎসাধীন আছেন উপাচার্য মুহাম্মদ মাসুদ। মঙ্গলবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি সেখানে ভর্তি হন।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464