কুমিল্লার মুরাদনগরে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক শ্রমিক দল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ পৃথক দুটি মামলা করেছে এবং ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
২৪ মার্চ সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক উবায়দুল সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, আকবপুর গ্রামে যাওয়ার পথে এক অটোরিকশা চালক নবীনগর সড়কের বদলে বিকল্প পথ নেওয়ার চেষ্টা করেন। কারণ জানতে চাইলে চালক জানান, “সরাসরি গেলে ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হবে।” পরে নবীনগর সড়কের মুখে চাঁদা না থাকায় চালককে মারধর করা হয়। প্রতিবাদ করলে হামলার শিকার হন যাত্রীরাও। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিক দল নেতা আবুল কালামকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এরপর ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করলে আন্দোলনকারীদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। রাতে হামলার শিকার ছাত্র আন্দোলনকারীরা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে যুবদল নেতা মাসুদ রানা ওরফে গুছা মাসুদের নেতৃত্বে ৭০-৮০ জনের একটি দল থানায় হামলা চালিয়ে দরজা-জানালা ভাঙচুর করে এবং আটক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, “চাঁদা দাবির অভিযোগে এক যুবককে আটক করার পর বিএনপি নেতারা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং থানায় হামলা চালান। এতে পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি হয়। হামলার ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে এবং ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-আবুল কালাম (৪৮), মো. হোসেন (২২), মো. ওয়াহাব আলী (৫৫), আবুল হাসান জুয়েল (৪২), মহসিন সরকার (৩৮), মো. জসীম উদ্দিন (৫৮)।
এ ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। চাঁদাবাজির অভিযোগে আবুল ফয়সাল বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৭০-৮০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। সরকারি কাজে বাধা ও থানায় হামলার অভিযোগে বিএনপির উপজেলা শাখার সভাপতি মহিউদ্দীন অঞ্জনসহ ৩১ জন এবং অজ্ঞাত আরও ৭০-৮০ জনকে আসামি করে এসআই আক্কাস আলী আরেকটি মামলা করেন।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দীন অঞ্জন বলেন, “আমি সেনাবাহিনীর সঙ্গে থানার ভেতরে উপস্থিত ছিলাম এবং আমাকে জানানো হয়েছিল যে, তদন্তের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু পরে শুনলাম, আমার বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। আমি সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই।”
এ ঘটনায় মুরাদনগর ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।