ঢাকা ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘কারফিউ ভাঙতে না পারলে নেতাকর্মীরা যেন চুড়ি-ফিতার ব্যবসা করেন’

চেকপোস্ট ডেস্ক::

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একপর্যায়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু হতাহত হন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, দেশব্যাপী সহিংসতায় ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দেশজুড়ে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ২৬৬।

সরকারের দাবি, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াত–শিবিরের নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে প্রবেশ করে সহিংসতা উসকে দিয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি, বনানীর সেতুভবন, মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, মেট্রোরেল স্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়।

পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ১৯ জুলাই রাত থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। মাঠে নামানো হয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের। সহিংসতার ঘটনায় শুধু রাজধানীতে ২২৯ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এতে রোববার পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ২ হাজার ৭৬৪ জনকে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল তৃতীয় পক্ষ। বিষয়টি নিয়ে সরকারকে প্রতিবেদনও দেয় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। ১৭ জুলাই থেকেই মূলত আন্দোলন ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এরপর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটতে থাকে একের পর এক নাশকতা। পরিস্থিতি দ্রুতই অবনতি হতে থাকে। চলতে থাকে স্মরণকালের ভয়াবহ নৈরাজ্য। এ অবস্থায় দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। কিন্তু এ কারফিউ ভাঙার নির্দেশ আসে বিদেশ থেকে।

নেতাকর্মীদের বলা হয়, যে কোনো মূল্যে কারফিউ ভাঙতে হবে। কারফিউ ভাঙতে না পারলে নেতাকর্মীরা যেন চুড়ি-ফিতার ব্যবসা করেন, সেই নির্দেশনাও আসে। এ নির্দেশনার কারণে কারফিউ জারির পরও রাজপথে ছিলেন সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রাথমিক অনুসন্ধানে মিলেছে এসব তথ্য।

ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র যুগান্তরকে জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে ‘ঘোলাপানিতে মাছ’ শিকারের চেষ্টা করেছে সরকারবিরোধী একাধিক রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি সুযোগ নিতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। কিন্তু কারফিউ জারি করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় সুযোগ সন্ধানীরা আপাতদৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু থেমে নেই তাদের তৎপরতা। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ওই সূত্র আরও জানায়, অন্দোলনে উসকানিদাতাদের নাম এবং মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে। যারা টাকা দিয়েছে, তাদের নাম-পরিচয় জানা গেছে। আন্দোলন চাঙ্গা করতে ঢাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুরকে চার লাখ টাকা দিয়েছেন একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান।

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:২৩:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
৫১১ বার পড়া হয়েছে

‘কারফিউ ভাঙতে না পারলে নেতাকর্মীরা যেন চুড়ি-ফিতার ব্যবসা করেন’

আপডেট সময় ১১:২৩:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একপর্যায়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু হতাহত হন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, দেশব্যাপী সহিংসতায় ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দেশজুড়ে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ২৬৬।

সরকারের দাবি, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াত–শিবিরের নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে প্রবেশ করে সহিংসতা উসকে দিয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি, বনানীর সেতুভবন, মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, মেট্রোরেল স্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়।

পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ১৯ জুলাই রাত থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। মাঠে নামানো হয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের। সহিংসতার ঘটনায় শুধু রাজধানীতে ২২৯ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এতে রোববার পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ২ হাজার ৭৬৪ জনকে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল তৃতীয় পক্ষ। বিষয়টি নিয়ে সরকারকে প্রতিবেদনও দেয় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। ১৭ জুলাই থেকেই মূলত আন্দোলন ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এরপর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটতে থাকে একের পর এক নাশকতা। পরিস্থিতি দ্রুতই অবনতি হতে থাকে। চলতে থাকে স্মরণকালের ভয়াবহ নৈরাজ্য। এ অবস্থায় দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। কিন্তু এ কারফিউ ভাঙার নির্দেশ আসে বিদেশ থেকে।

নেতাকর্মীদের বলা হয়, যে কোনো মূল্যে কারফিউ ভাঙতে হবে। কারফিউ ভাঙতে না পারলে নেতাকর্মীরা যেন চুড়ি-ফিতার ব্যবসা করেন, সেই নির্দেশনাও আসে। এ নির্দেশনার কারণে কারফিউ জারির পরও রাজপথে ছিলেন সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রাথমিক অনুসন্ধানে মিলেছে এসব তথ্য।

ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র যুগান্তরকে জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে ‘ঘোলাপানিতে মাছ’ শিকারের চেষ্টা করেছে সরকারবিরোধী একাধিক রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি সুযোগ নিতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। কিন্তু কারফিউ জারি করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় সুযোগ সন্ধানীরা আপাতদৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু থেমে নেই তাদের তৎপরতা। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ওই সূত্র আরও জানায়, অন্দোলনে উসকানিদাতাদের নাম এবং মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে। যারা টাকা দিয়েছে, তাদের নাম-পরিচয় জানা গেছে। আন্দোলন চাঙ্গা করতে ঢাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুরকে চার লাখ টাকা দিয়েছেন একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান।