কয়রায় স্কুল চলাকালীন শিক্ষকের ওপর হামলা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মহলে উদ্বেগ
খুলনার কয়রা উপজেলার বায়লারহানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি চলাকালে সহকারী শিক্ষক মো. নুরুল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (৭ মে) বিকেল আনুমানিক ৩টার দিকে বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসে ঢুকে স্থানীয় এক ব্যক্তি শিক্ষককে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় শ্রেণিকক্ষে থাকা শিক্ষার্থীরা ভীত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের বরাতে জানা যায়, সহকারী শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম ক্লাস নিচ্ছিলেন। হঠাৎ করে এক যুবক শ্রেণিকক্ষে ঢুকে তাকে গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে তার হাতে থাকা নির্দেশনার ছড়ি (লাঠি) কেড়ে নিয়ে শিক্ষককে মারধর করতে থাকে এবং টেনে হিঁচড়ে শ্রেণিকক্ষ থেকে স্কুল মাঠে নিয়ে যায়। হামলার সময় শিক্ষকের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায় এবং পকেটে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার সময় পাশে থাকা এক ফাস্টফুড বিক্রেতা নারী চিৎকার শুরু করলে সহকারী শিক্ষিকারা এগিয়ে এসে হামলাকারীর হাত থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে শিক্ষককে উদ্ধার করেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা বিথী বিশ্বাস বলেন, “আমি উপরের ক্লাসে ছিলাম। ক্লাস শেষে অফিসে এসে দেখি স্যার কাপছেন, তার গায়ের পাঞ্জাবি ছেঁড়া। পরে শিক্ষার্থীদের কাছে শুনি ক্লাসে ঢুকে এক লোক তাকে গালিগালাজ ও মারধর করেছে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি মো. মুজাহিদ হোসেন ওরফে লাটুম বলেন, “আমি তার (শিক্ষক) কাছে টাকা পাই। বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম টাকা চাইতে।” তবে তিনি শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ আজুজুন্নাহার বলেন, “আমি সেসময় মিটিংয়ে ছিলাম। মোবাইলে খবর পেয়ে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করি। আমি এই ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করছি।”
এ প্রসঙ্গে কয়রা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার কর্মকার বলেন, “বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে ফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।”
এ ঘটনায় বিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষক সমাজ এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।