ঢাকা ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপকূলে নারীদের জরায়ু সংক্রমণ বেড়েছে লবণাক্ত পানি পানে

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: চেকপোস্ট

লবণাক্ত পানি পান করার ফলে উপকূলীয় নারীদের জরায়ু সংক্রমণ বেড়ে গেছে। উপকূলীয় অঞ্চলের ৭৩% মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার প্রায় ৩ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে পারেন না, এবং দেড় কোটি মানুষ বাধ্য হয়ে ভূগর্ভস্থ লবণাক্ত পানি পান করছেন।

উপকূলীয় অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে। আজ ২২ মার্চ বেলা ১১টায় মোংলার দক্ষিণ কাইনমারিতে পশুর নদীর পাড়ে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে খালি কলস হাতে মিছিল শেষে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও পরিবেশ যোদ্ধা মোঃ নুর আলম শেখের সভাপতিত্বে উপকূলীয় নারীদের অংশগ্রহণে এই কর্মসূচির আয়োজন করে ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’, ‘ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’ ও ‘পশুর রিভার ওয়াটারকিপার’।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’-এর নেত্রী কমলা সরকার, সার্ভিস বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের হাসিব সরদার, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার চন্দ্রিমা মন্ডল, রত্না শেখ ও তন্মী মন্ডল প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, “আমরা পরিষ্কার ও নিরাপদ পানির হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমরা পানীয় উপযোগী, মাছের বসবাসের উপযোগী এবং গোসলের পানির জন্য সংগ্রাম করছি।” তিনি আরও বলেন, “পানির আরেক নাম জীবন। তাই জরুরি ভিত্তিতে উপকূলের সুপেয় পানি সংকট সমাধান করতে হবে। পানি সংরক্ষণের অবকাঠামো নির্মাণ ও পানি সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।”

‘ধরা’র নেত্রী কমলা সরকার বলেন, “মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে নারীরা খাবার পানি সংগ্রহ করছে, ফলে তাদের শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্র থেকে স্থলভাগের অনেক ভেতর পর্যন্ত লবণ পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে মানুষকে পানির সঙ্গে তুলনামূলক বেশি পরিমাণে লবণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। এতে নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে এবং গর্ভবতী নারীদের মধ্যে প্রি-এক্লেম্পসিয়া ও উচ্চ রক্তচাপের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।”

পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার রত্না শেখ বলেন, “উপকূলীয় মানুষের সুপেয় পানির টেকসই সমাধান করতে হবে। মিঠা পানির উৎস ভরাট, দখল ও দূষণ বন্ধ করতে হবে। নিরাপদ পানির সার্বজনীন প্রবাহ নিশ্চিত করতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।”

সমাবেশের আগে পশুর নদীর পাড়ে খালি কলস হাতে নিয়ে উপকূলীয় নারীরা মিছিল করেন এবং সুপেয় পানির দাবিতে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৮:৪২:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
৫১৮ বার পড়া হয়েছে

উপকূলে নারীদের জরায়ু সংক্রমণ বেড়েছে লবণাক্ত পানি পানে

আপডেট সময় ০৮:৪২:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

লবণাক্ত পানি পান করার ফলে উপকূলীয় নারীদের জরায়ু সংক্রমণ বেড়ে গেছে। উপকূলীয় অঞ্চলের ৭৩% মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার প্রায় ৩ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে পারেন না, এবং দেড় কোটি মানুষ বাধ্য হয়ে ভূগর্ভস্থ লবণাক্ত পানি পান করছেন।

উপকূলীয় অঞ্চলকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে। আজ ২২ মার্চ বেলা ১১টায় মোংলার দক্ষিণ কাইনমারিতে পশুর নদীর পাড়ে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে খালি কলস হাতে মিছিল শেষে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও পরিবেশ যোদ্ধা মোঃ নুর আলম শেখের সভাপতিত্বে উপকূলীয় নারীদের অংশগ্রহণে এই কর্মসূচির আয়োজন করে ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’, ‘ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’ ও ‘পশুর রিভার ওয়াটারকিপার’।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’-এর নেত্রী কমলা সরকার, সার্ভিস বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের হাসিব সরদার, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার চন্দ্রিমা মন্ডল, রত্না শেখ ও তন্মী মন্ডল প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, “আমরা পরিষ্কার ও নিরাপদ পানির হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমরা পানীয় উপযোগী, মাছের বসবাসের উপযোগী এবং গোসলের পানির জন্য সংগ্রাম করছি।” তিনি আরও বলেন, “পানির আরেক নাম জীবন। তাই জরুরি ভিত্তিতে উপকূলের সুপেয় পানি সংকট সমাধান করতে হবে। পানি সংরক্ষণের অবকাঠামো নির্মাণ ও পানি সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।”

‘ধরা’র নেত্রী কমলা সরকার বলেন, “মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে নারীরা খাবার পানি সংগ্রহ করছে, ফলে তাদের শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্র থেকে স্থলভাগের অনেক ভেতর পর্যন্ত লবণ পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে মানুষকে পানির সঙ্গে তুলনামূলক বেশি পরিমাণে লবণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। এতে নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে এবং গর্ভবতী নারীদের মধ্যে প্রি-এক্লেম্পসিয়া ও উচ্চ রক্তচাপের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।”

পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার রত্না শেখ বলেন, “উপকূলীয় মানুষের সুপেয় পানির টেকসই সমাধান করতে হবে। মিঠা পানির উৎস ভরাট, দখল ও দূষণ বন্ধ করতে হবে। নিরাপদ পানির সার্বজনীন প্রবাহ নিশ্চিত করতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।”

সমাবেশের আগে পশুর নদীর পাড়ে খালি কলস হাতে নিয়ে উপকূলীয় নারীরা মিছিল করেন এবং সুপেয় পানির দাবিতে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।