ঢাকা ০৪:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উচ্চ ফলনশীল চীনা বাদাম চাষে কৃষকের মুখে হাসি

চেকপোস্ট ডেস্ক::

স্বল্প খরচে, স্বল্প পরিশ্রমে অধিক লাভের আশায় প্রথমবারেই বাজিমাত করেছে উচ্চ ফলনশীল লোরি জাতের চীনা বাদাম চাষ। পরিত্যক্ত জমিতে বাদাম ব্যতীত অন্য কোনো ফসল চাষ করে বাদামের সমপরিমাণ লাভ হবে না। আবার চীনা বাদাম চাষে তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন নেই, নেই রাসায়নিক সারেরও তেমন ব্যবহার। এরপরেও বাম্পার ফলন আশা জাগিয়েছে কৃষকদের মাঝে। অনেকে এই বাদাম চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

চিরিরবন্দরে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলক প্রথমবারে ৬টি প্রদর্শনীতে প্রান্তিক পর্যায়ের ছয়জন কৃষক প্রায় ৩ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল লোরি জাতের চীনা বাদাম চাষ করছেন। ফলন ভালো হয়েছে এবং ভালো লাভবানও হবে, এমনটা আশা কৃষকদের। ফলে স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল চীনা বাদামের চাষ ব্যাপক সম্প্রসারিত হবে বলে কৃষি বিভাগ।

চিরিরবন্দরের ফতেজংপুর ইউপির ডাঙ্গারহাট এলাকার কৃষক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানায়, ২০ শতক জমিতে উচ্চ ফলনশীল লোরি জাতের চীনা বাদাম চাষ করেছেন। ফলনও ভালোই হয়েছে। মুঠি ধরে গাছে টান দিলেই উঠে আসছে থোকা থোকা সোনালী রঙের বাদাম। ওই জমিতে তিনি ৬-৭ মণ বাদাম পাবেন বলে আশা করছেন। বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ ৪/৫ হাজার টাকা দরে চীনা বাদাম বিক্রি হচ্ছে।

আব্দুলপুর ইউপির চিরিরবন্দর গ্রামের বাদাম চাষি ওমর ফারুক বলেন, এ এলাকায় ধান, পাট, আলু, টমেটো, লিচু চাষ হয়ে থাকে। কৃষি অফিসের পরামর্শে ও প্রণোদনায় প্রায় ১ একর জমিতে উচ্চফলনশীল লোরি জাতের চীনা বাদাম চাষ করছি। প্রথমবার এলাকায় চীনা বাদাম চাষ করেছি। বাদামের ফলন বেশ ভালোই হবে। বাদাম চাষে খরচও অনেক কম। কোনো নিড়ানীও দিতে হয় না। আশা করছি, পরীক্ষামূলক প্রথমবার চীনা বাদাম চাষেই লাভবান হতে পারবো।

ফতেজংপুর ইউপির দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজওয়ানুল হক বলেন, অন্যান্য ফসল চাষের চেয়ে বাদাম চাষে খরচ অনেক কম। বীজ রোপণ ও পরিপক্ক বাদাম উত্তোলন পর্যন্ত তেমন খরচও নেই বললেই চলে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, চীনা বাদামের পুষ্টিগুণ অনেক। চীনা বাদাম একটি উৎকৃষ্ট ভোজ্য তেলবীজ এবং স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল। এর বীজে শতকরা ৪৮-৫০ ভাগ তেল ও শতকরা ২২-২৯ ভাগ আমিষ রয়েছে। চীনা বাদামের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ২-২.২ মেট্রিক টন।

দিনাজপুর অঞ্চলে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে চলতি খরিপ-১ মৌসুমে চিরিরবন্দরের বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৩ একর জমিতে কৃষকদের বাদাম চাষ করানো হয়েছে। আশা করছি, চীনা বাদামের ভালো ফলন পেয়ে কৃষকরা লাভবান হবেন। স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল চীনা বাদামের চাষ উপজেলায় সম্প্রসারিত হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৪:৫৫:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪
৫১২ বার পড়া হয়েছে

উচ্চ ফলনশীল চীনা বাদাম চাষে কৃষকের মুখে হাসি

আপডেট সময় ০৪:৫৫:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪

স্বল্প খরচে, স্বল্প পরিশ্রমে অধিক লাভের আশায় প্রথমবারেই বাজিমাত করেছে উচ্চ ফলনশীল লোরি জাতের চীনা বাদাম চাষ। পরিত্যক্ত জমিতে বাদাম ব্যতীত অন্য কোনো ফসল চাষ করে বাদামের সমপরিমাণ লাভ হবে না। আবার চীনা বাদাম চাষে তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন নেই, নেই রাসায়নিক সারেরও তেমন ব্যবহার। এরপরেও বাম্পার ফলন আশা জাগিয়েছে কৃষকদের মাঝে। অনেকে এই বাদাম চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

চিরিরবন্দরে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলক প্রথমবারে ৬টি প্রদর্শনীতে প্রান্তিক পর্যায়ের ছয়জন কৃষক প্রায় ৩ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল লোরি জাতের চীনা বাদাম চাষ করছেন। ফলন ভালো হয়েছে এবং ভালো লাভবানও হবে, এমনটা আশা কৃষকদের। ফলে স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল চীনা বাদামের চাষ ব্যাপক সম্প্রসারিত হবে বলে কৃষি বিভাগ।

চিরিরবন্দরের ফতেজংপুর ইউপির ডাঙ্গারহাট এলাকার কৃষক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানায়, ২০ শতক জমিতে উচ্চ ফলনশীল লোরি জাতের চীনা বাদাম চাষ করেছেন। ফলনও ভালোই হয়েছে। মুঠি ধরে গাছে টান দিলেই উঠে আসছে থোকা থোকা সোনালী রঙের বাদাম। ওই জমিতে তিনি ৬-৭ মণ বাদাম পাবেন বলে আশা করছেন। বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ ৪/৫ হাজার টাকা দরে চীনা বাদাম বিক্রি হচ্ছে।

আব্দুলপুর ইউপির চিরিরবন্দর গ্রামের বাদাম চাষি ওমর ফারুক বলেন, এ এলাকায় ধান, পাট, আলু, টমেটো, লিচু চাষ হয়ে থাকে। কৃষি অফিসের পরামর্শে ও প্রণোদনায় প্রায় ১ একর জমিতে উচ্চফলনশীল লোরি জাতের চীনা বাদাম চাষ করছি। প্রথমবার এলাকায় চীনা বাদাম চাষ করেছি। বাদামের ফলন বেশ ভালোই হবে। বাদাম চাষে খরচও অনেক কম। কোনো নিড়ানীও দিতে হয় না। আশা করছি, পরীক্ষামূলক প্রথমবার চীনা বাদাম চাষেই লাভবান হতে পারবো।

ফতেজংপুর ইউপির দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজওয়ানুল হক বলেন, অন্যান্য ফসল চাষের চেয়ে বাদাম চাষে খরচ অনেক কম। বীজ রোপণ ও পরিপক্ক বাদাম উত্তোলন পর্যন্ত তেমন খরচও নেই বললেই চলে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, চীনা বাদামের পুষ্টিগুণ অনেক। চীনা বাদাম একটি উৎকৃষ্ট ভোজ্য তেলবীজ এবং স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল। এর বীজে শতকরা ৪৮-৫০ ভাগ তেল ও শতকরা ২২-২৯ ভাগ আমিষ রয়েছে। চীনা বাদামের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ২-২.২ মেট্রিক টন।

দিনাজপুর অঞ্চলে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে চলতি খরিপ-১ মৌসুমে চিরিরবন্দরের বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৩ একর জমিতে কৃষকদের বাদাম চাষ করানো হয়েছে। আশা করছি, চীনা বাদামের ভালো ফলন পেয়ে কৃষকরা লাভবান হবেন। স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল চীনা বাদামের চাষ উপজেলায় সম্প্রসারিত হবে।