পবিত্র মাহে রমজান এলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়, যা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে। অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, ফলে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য নিত্যপণ্য কেনা কঠিন হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে—”সুলভ মূল্যের হাট”।
উপজেলা পরিষদ চত্বরে পহেলা রমজান থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী এই হাটে ৩২টি স্টলের মাধ্যমে মাংস, চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন সহায়তা করছে, যার মধ্যে রয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, চরমোনাই, খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদ প্রভৃতি।
সুলভ মূল্যের এই হাট থেকে সাধারণ মানুষ বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে পণ্য কিনতে পারছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পণ্যের দাম নিম্নরূপ-গরুর মাংস – ৬৫০ টাকা/কেজি, পোল্ট্রি মুরগি – ২০০ টাকা/কেজি, আতপ চাল – ১০৫ টাকা/কেজি, ছোলা – ১০০ টাকা/কেজি, সাদা চিনি – ১১৫ টাকা/কেজি, মসুর ডাল – ১০০ টাকা/কেজি, পেঁয়াজ – ৩৫ টাকা/কেজি, রসুন – ৮০ টাকা/কেজি, গোল আলু – ১৬ টাকা/কেজি, হল্যান্ড আলু – ২০ টাকা/কেজি, সয়াবিন তেল – ১৭০ টাকা/লিটার।
উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়ন থেকে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মুমিন বলেন, “এমন উদ্যোগে আমরা খুবই উপকৃত। ভবিষ্যতেও যেন এটি চালু থাকে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মো. তানহার আলী বলেন, “আমরা শুরু থেকেই একটি স্টল বরাদ্দ নিয়ে সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রি করছি। এটি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য দারুণ সহায়ক। ভবিষ্যতে আমরা এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজে আরও অংশ নেব।”
ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি হায়দার আলী বলেন,
“এই উদ্যোগে আমরা শুরু থেকেই সহযোগিতা করে আসছি। এটি যেন ভবিষ্যতেও চালু থাকে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহমেদ বলেন, “সুযোগ্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশে রমজানে কৃত্রিম সংকট রোধ ও বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমরা সুলভ মূল্যের হাট চালু করেছি। এতে একদিকে বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় থাকছে, অন্যদিকে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে।”
এই উদ্যোগের ফলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষজন স্বল্প খরচে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছেন এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে।