আলোচনায় ১৬ এপ্রিল: নির্বাচন ও রোডম্যাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন তুলবে বিএনপি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে আলোচনায় ১৬ এপ্রিল। এদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিএনপি। বৈঠকে নির্বাচনের সময়সীমা ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাবে দলটি।
বিএনপি ও তাদের মিত্র দলগুলো চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। দলটির নীতিনির্ধারকদের মতে, বড় সংস্কারের আগে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা জরুরি। তারা বলছেন, “এখনই নির্বাচন করতে বলছি না, কিন্তু ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুত ভোট দরকার।”
বিএনপি নেতারা আশঙ্কা করছেন, নির্বাচন পেছালে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বাড়বে এবং দেশের ক্ষতি হতে পারে। তারা মনে করছেন, একটি নির্বাচিত সরকারই জনগণের ভাষা বুঝতে পারে এবং গণতন্ত্রের পথে বড় সংস্কার করতে সক্ষম হবে।
গত শনিবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
তবে রাত সাড়ে ৯টার পর এক বিজ্ঞপ্তি সংশোধনে বলা হয়, ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬ এর মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যেই সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রেস বিজ্ঞপ্তির এ পরিবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছিলেন, ডিসেম্বরেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য কাজ চলছে। আমরা সেটি জাতিকে জানাতে বলেছিলাম। এখন তিনি ভিন্ন কথা বলছেন, আমরা তার সঙ্গে একমত নই।”
অন্য এক স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “নির্বাচন বিলম্বে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাই।”
জানা গেছে, ১৬ এপ্রিলের বৈঠকে বিএনপি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা এবং নির্দিষ্ট রোডম্যাপ স্পষ্টভাবে জানতে চাইবে। পরদিন, ১৭ এপ্রিল, দলটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসবে সংস্কার ইস্যুতে। এরপর সরকারের মনোভাব বুঝে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।
মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য, নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের উদ্যোগ না থাকলে আন্দোলন কর্মসূচির পথেই যেতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি সংশোধনের বিষয়টিকে অনেকে একটি পরিকল্পিত গড়িমসি হিসেবে দেখছেন, যার মাধ্যমে নির্বাচন পেছানোর ফাঁক তৈরি করা হতে পারে।