আর্শীবাদ নয়, অভিশাপে পরিণত খুলনার শিপইয়ার্ড সড়ক প্রকল্প
খুলনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ শিপইয়ার্ড সড়কের নির্মাণকাজ দীর্ঘদিনেও শেষ হয়নি। এর প্রতিবাদে আজ (২৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় দাদা ম্যাচ কোম্পানির সামনে সড়কেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে “খুলনা নাগরিক সমাজ”।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোঃ বাবুল হাওলাদার বলেন, প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি বহুদিন ধরে নাজুক অবস্থায় থাকলেও স্থায়ী সমাধান নেওয়া হয়নি। ২০১৩ সালে একনেকে ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয় এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল ২০২৪ সালের জুন, কিন্তু এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ অসম্পূর্ণ।
কেডিএ দাবি করছে ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, তবে সরেজমিনে দেখা যায় সড়কের দুইপাশ খুঁড়ে ফেলে রাখা, ইট-খোয়া ছড়িয়ে রাখা, গর্তে পানি জমে চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। রোড ডিভাইডার, ড্রেন, ফুটপাথ, লবনচরা সেতু, মতিয়াখালী স্লুইস গেট ও কালভার্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনো বাকি রয়েছে।
এ অবস্থায় শুধু সাধারণ মানুষই নয়, বরং স্থানীয় শিল্প-বাণিজ্যও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে, প্রতিবছর শত কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায়ও বড় বাধা তৈরি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃত ধীরগতিতে কাজ করছে। সহজ ও লাভজনক কাজ শেষ করে তারা প্রায় ৭০ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। অথচ ব্যয় বেড়ে আড়াই গুণ হলেও কাজ সম্পূর্ণ হয়নি এবং কোনো জবাবদিহিতাও নেই।
বক্তারা দাবি করেন, শিপইয়ার্ড সড়ক এখন চাষাবাদের জমিতে পরিণত হয়েছে। নির্মাণ কাজ বন্ধের সুনির্দিষ্ট কারণ প্রকাশ, ধীরগতির জন্য দায়ীদের শাস্তি এবং দ্রুত কাজ শেষ করার দাবি জানান তারা। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি এ দুর্ভোগের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়।