ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন
আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্ট নয়, ছিল বিশ্ববিদ্যালয়েও
খুলনার সুন্দরবন আদর্শ কলেজের ৫৬তম বর্ষপূর্তি ও পূর্ণমিলনী-২০২৫ উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (৩ জানুয়ারি) সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন ও শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, “আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই সীমাবদ্ধ ছিল না, এটি বিশ্ববিদ্যালয়, হোটেল এবং ব্যক্তিগত বাড়িতেও ছিল। আমি আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখব এবং দেশ ও জনগণের জন্য কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের তরুণ প্রজন্ম যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেটি বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। এখনো সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি চলছে। সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের এসব প্রতিহত করার আহ্বান জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারি সুন্দরবন কলেজ আয়তনে ছোট হলেও এটি অনেক বড় বড় ব্যক্তির জন্ম দিয়েছে। তবে পুরাতন কলেজ হিসেবে এর অবকাঠামো যতটা উন্নত হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি। কলেজটি সম্প্রসারণ এবং আধুনিকায়নের প্রয়োজন।” এ সময় কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। কলেজের পাশের ফাঁকা জমি অধিগ্রহণ করে সীমানা বাড়ানো। নতুন নকশা করে আধুনিকায়ন। অবকাঠামোগত উন্নয়ন। প্রধান অতিথি দাবি গুলো শিক্ষা উপদেষ্টাকে অবহিত করার আশ্বাস দেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “এক সময় খুলনা শহরে মোংলা পোর্টের অফিস ছিল। এটি পুনরায় খুলনা শহরে ফিরিয়ে আনতে হবে। মোংলা পোর্ট খুলনার পোর্ট এবং এটিকে কার্যকর করার দায়িত্ব আমাদের সবার। কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ না হলে বন্দরটির পূর্ণ বিকাশ সম্ভব হবে না।” তিনি আরও বলেন, ট্যারিফ কমিয়ে আমদানিকারকদের এ বন্দর ব্যবহারে উৎসাহী করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেজর জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ, সিনিয়র ডিরেক্টিং স্টাফ (আর্মি), ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ; প্রফেসর ড. রেজাউল করিম, উপাচার্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়; মো. ফিরোজ সরকার, খুলনা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার; মো. জুলফিকার আলী হায়দার, পুলিশ কমিশনার; মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক; এবং নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি। এরপর তিনি কলেজের বিভিন্ন ভবন ঘুরে দেখেন। এক আনন্দ র্যালি কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে নগরীর পিটিআই মোড় হয়ে পুনরায় কলেজে এসে শেষ হয়। র্যালিতে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।