Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the ad-inserter domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the perfecty-push-notifications domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the login-customizer domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
আমার একটি স্বপ্ন আছে: মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ঐতিহাসিক ভাষণ
ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমার একটি স্বপ্ন আছে: মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ঐতিহাসিক ভাষণ

শহীদুল ইসলাম শরীফ, স্টাফ রিপোর্টার::

ছবি: মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র

বিশ্বের ইতিহাসে কিছু কিছু ভাষণ সময়ের সীমানা পেরিয়ে চিরন্তন হয়ে ওঠে। তেমনি একটি অনন্য ভাষণ হল মার্কিন মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা রেভারেন্ড মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের “আমার একটি স্বপ্ন আছে” (I Have a Dream) ভাষণ। ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিঙ্কন মেমোরিয়ালে সমবেত দুই লাখেরও বেশি মানুষের সামনে তিনি এই ভাষণ দেন, যা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারের আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়নি, বরং বিশ্বজুড়ে সাম্য, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের জন্য সংগ্রামরত মানুষদের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৯৬৩ সাল ছিল যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। কৃষ্ণাঙ্গরা তখনো নানাভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছিলেন। সেই সময়ে নাগরিক অধিকার আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে এবং ‘ওয়াশিংটনের জন্য মার্চ’ নামে একটি বিশাল শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। এ বিক্ষোভে অংশ নিতে লাখো মানুষ জড়ো হয়, যেখানে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র তাঁর কালজয়ী ভাষণ দেন।

মার্টিন লুথার কিং তাঁর ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে, “এই জাতির প্রতিটি নাগরিককে সমানভাবে তৈরি করা হয়েছে।” তিনি উল্লেখ করেন যে, দাসপ্রথার অবসান ঘটানোর পরও কৃষ্ণাঙ্গরা প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করেনি, বরং তারা বর্ণবাদ ও বৈষম্যের শৃঙ্খলে বন্দি থেকে গেছে। তিনি আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানান যে, তাদের সংবিধানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে এবং কৃষ্ণাঙ্গদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

ভাষণের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ ছিল তাঁর ‘আমার একটি স্বপ্ন আছে’ (I Have a Dream) শিরোনামের অংশটি। এখানে তিনি এমন একটি ভবিষ্যতের কল্পনা করেন যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গরা একসঙ্গে সমতার ভিত্তিতে বসবাস করতে পারবে। তিনি বলেন,

“আমার একটি স্বপ্ন আছে যে একদিন এই জাতি জেগে উঠবে এবং তার ধর্মবিশ্বাসের প্রকৃত অর্থ বাস্তবায়িত করবে: আমরা এই সত্যগুলিকে স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে রাখি যে, সকল মানুষকে সমানভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমার একটি স্বপ্ন আছে যে আমার চারটি সন্তান একদিন এমন একটি দেশে বাস করবে যেখানে তাদের ত্বকের রং দ্বারা নয় বরং তাদের চরিত্রের বিষয়বস্তু দ্বারা বিচার করা হবে।”

এই ভাষণটি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। ১৯৬৪ সালে নাগরিক অধিকার আইন (Civil Rights Act) পাশ হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের আইনে বর্ণবৈষম্য নিষিদ্ধ করে। মার্টিন লুথার কিং এর অহিংস আন্দোলন এবং তাঁর প্রভাব বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়। ১৯৬৪ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল, টেনেসির মেমফিসে এক আততায়ীর গুলিতে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের জীবন শেষ হয়ে যায়। তবে তাঁর স্বপ্ন আজও বেঁচে আছে। তাঁর ভাষণ আজও মানুষকে সাম্য, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর এই ঐতিহাসিক ভাষণ শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নয়, বরং সমগ্র মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:৫৪:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
৬০১ বার পড়া হয়েছে

আমার একটি স্বপ্ন আছে: মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ঐতিহাসিক ভাষণ

আপডেট সময় ১০:৫৪:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

বিশ্বের ইতিহাসে কিছু কিছু ভাষণ সময়ের সীমানা পেরিয়ে চিরন্তন হয়ে ওঠে। তেমনি একটি অনন্য ভাষণ হল মার্কিন মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা রেভারেন্ড মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের “আমার একটি স্বপ্ন আছে” (I Have a Dream) ভাষণ। ১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট ওয়াশিংটনের লিঙ্কন মেমোরিয়ালে সমবেত দুই লাখেরও বেশি মানুষের সামনে তিনি এই ভাষণ দেন, যা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারের আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়নি, বরং বিশ্বজুড়ে সাম্য, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের জন্য সংগ্রামরত মানুষদের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৯৬৩ সাল ছিল যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। কৃষ্ণাঙ্গরা তখনো নানাভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছিলেন। সেই সময়ে নাগরিক অধিকার আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে এবং ‘ওয়াশিংটনের জন্য মার্চ’ নামে একটি বিশাল শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। এ বিক্ষোভে অংশ নিতে লাখো মানুষ জড়ো হয়, যেখানে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র তাঁর কালজয়ী ভাষণ দেন।

মার্টিন লুথার কিং তাঁর ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে, “এই জাতির প্রতিটি নাগরিককে সমানভাবে তৈরি করা হয়েছে।” তিনি উল্লেখ করেন যে, দাসপ্রথার অবসান ঘটানোর পরও কৃষ্ণাঙ্গরা প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করেনি, বরং তারা বর্ণবাদ ও বৈষম্যের শৃঙ্খলে বন্দি থেকে গেছে। তিনি আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানান যে, তাদের সংবিধানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে এবং কৃষ্ণাঙ্গদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

ভাষণের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ ছিল তাঁর ‘আমার একটি স্বপ্ন আছে’ (I Have a Dream) শিরোনামের অংশটি। এখানে তিনি এমন একটি ভবিষ্যতের কল্পনা করেন যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গরা একসঙ্গে সমতার ভিত্তিতে বসবাস করতে পারবে। তিনি বলেন,

“আমার একটি স্বপ্ন আছে যে একদিন এই জাতি জেগে উঠবে এবং তার ধর্মবিশ্বাসের প্রকৃত অর্থ বাস্তবায়িত করবে: আমরা এই সত্যগুলিকে স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে রাখি যে, সকল মানুষকে সমানভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমার একটি স্বপ্ন আছে যে আমার চারটি সন্তান একদিন এমন একটি দেশে বাস করবে যেখানে তাদের ত্বকের রং দ্বারা নয় বরং তাদের চরিত্রের বিষয়বস্তু দ্বারা বিচার করা হবে।”

এই ভাষণটি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে। ১৯৬৪ সালে নাগরিক অধিকার আইন (Civil Rights Act) পাশ হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের আইনে বর্ণবৈষম্য নিষিদ্ধ করে। মার্টিন লুথার কিং এর অহিংস আন্দোলন এবং তাঁর প্রভাব বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়। ১৯৬৪ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল, টেনেসির মেমফিসে এক আততায়ীর গুলিতে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের জীবন শেষ হয়ে যায়। তবে তাঁর স্বপ্ন আজও বেঁচে আছে। তাঁর ভাষণ আজও মানুষকে সাম্য, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর এই ঐতিহাসিক ভাষণ শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নয়, বরং সমগ্র মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471