আগুন থেকে বেঁচে ফেরা এক শিক্ষকের ভয়াবহ বর্ণনা
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ঘটনার ভয়াবহতা নিয়ে বেঁচে ফেরা এক শিক্ষক হৃদয়বিদারক বর্ণনা দিয়েছেন।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং বহু শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ দগ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বেঁচে যাওয়া ওই শিক্ষক বলেন, “ঘটনাটি এতটাই আকস্মিক ছিল যে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্কুল ছুটির ঘণ্টা বাজার পর শিক্ষার্থীরা গেটে অপেক্ষা করছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো ভবন। এরপর চারদিক অন্ধকার, শুধু আগুন আর ধোঁয়ার ঝলক। আমার দৃষ্টিসীমা একেবারে কমে আসে।”
তিনি জানান, আগুনে তার হাত পুড়ে যায়, মুখ ও কান ঝলসে যায়, আর শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল।
তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ওয়াশরুমে গিয়ে একটি ভেজা কাপড় এনে নিজের নাক-মুখ ঢাকেন এবং পাশে থাকা বাচ্চাদেরও একই কাজ করতে বলেন। “তাদের অনেকের শার্টে ততক্ষণে আগুন ধরে গিয়েছিল। আমি সবাইকে নিচু হয়ে থাকতে এবং মুখ ঢাকতে বলি,” — বলেন শিক্ষকটি।
তার সঙ্গে থাকা তিনজন শিক্ষার্থী আগুনের ভেতর থেকে কোনোমতে বেরিয়ে আসেন।
তাদের মধ্যে একজন গুরুতর দগ্ধ হওয়ায় সিএমএইচ বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, “ওই শিক্ষার্থীর শরীরের কিছু অংশে চামড়া উঠে গিয়েছিল। আমি নিজের কাপড় খুলে তাকে মুড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমি নিজেও যন্ত্রণায় ছিলাম, কিন্তু নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা করেছি, যেন বাচ্চারা ভয়ে ভেঙে না পড়ে।”
এই শিক্ষকের সাহসিকতা এবং তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত অনেকের জীবন বাঁচাতে সহায়ক হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।