আগাম সবজিতে স্বপ্ন বুনছেন নীলফামারীর কৃষকরা
শীতকালীন আগাম সবজি চাষে অধিক লাভের আশায় নীলফামারীর কৃষকরা সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনুকূল আবহাওয়ায় বাম্পার ফলনের সম্ভবনা থাকায় আগাম জাতের সবজি চাষে ঝুঁকছেন জেলার কৃষকেরা।
জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুর উপজেলার নীচু জমিতে রয়েছে ধানসহ বিভিন্ন ফসল। আর অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে লাগানো হচ্ছে নানা জাতের শাক-সবজি। আগে যারা ফুলকপি, পাতা কপি, শিম, লাউ, লাল শাক, পালং শাক, বেগুন ইত্যাদি লাগিয়েছেন তারা তুলে দ্রুত বাজারে পাঠাচ্ছেন।
জেলার সৈয়দপুরের বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি আবাদ হয়ে থাকে। এখানকার উৎপাদিত শাক-সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলায় পাঠানো হচ্ছে। দূরদূরান্তের পাইকাররা ট্রাক নিয়ে মাঠ থেকে পাইকারি দরে সবজি ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছেন।
ট্রাক নিয়ে আসা পাইকার আজগর আলী জানান, ‘আমরা আগাম জাতের ফুল কপি ও পাতা কপি পিস হিসাবে কিনছি। এতে কপির কেজি পড়ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি পড়ছে। এসব কপি ঢাকা ও অন্যান্য জেলায় পাঠানো হচ্ছে। এতে খরচ বাদ দিয়ে ভালো লাভ থাকছে। মাঠে শাক-সবজি বিক্রি করায় বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না কৃষকদের।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভোর থেকে সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকেরা। কেউ ফুলকপি ক্ষেতে আগাছা কাটছে আবার কেউ করলা ক্ষেতে কীটনাশক দিচ্ছে। শ্রমিকদের সঙ্গে সবজি ক্ষেতের পরিচর্যা করতে দেখা গেছে অনেক কৃষককে।
সৈয়দপুরের বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কৃষক ওয়াহেদ আলী জানান, ‘এ বছরও জিনিসপত্রে দাম অনেক বেশি, আশা করছি বাজারদর ভালো থাকলে আগাম সবজি চাষে বেশ লাভ হবে। তবে মৌসুমের শুরুতে শীতকালীন সবজির ভালো দাম পাওয়া যায়। এ কারণে শীত শুরু হওয়ার আগেই শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু করে এখন সেসব শাক-সবজি বাজারে তুলতে পারছি।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. এস. এম. আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ধানের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় কয়েক বছর ধরে শাক-সবজির আবাদ বেশি করছেন কৃষকরা। বিশেষ করে আগাম জাতের শাক-সবজি আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন জেলার কৃষকরা।
মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আবাদ বাড়ানোর ব্যাপারে আমরা কৃষকদের উৎসাহিত করছি। তবে বৃষ্টির কারণে জেলায় সবজি চাষ সামান্য পিছিয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৭০ হেক্টর জমিতে আগাম শাক-সবজি চাষ হয়েছে।’