আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া
আওয়ামী লীগকে ‘পুনর্বাসনের পরিকল্পনা’ করা হচ্ছে-এমন অভিযোগ এনে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী দুই দলের নেতারা বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘গণহত্যা ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত নন, এমন কারও নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোনো বাধা নেই।’
এই বক্তব্যে বিএনপির পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরলে তাদের আপত্তি থাকবে না।
জামায়াতে ইসলামী আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিরোধিতা করেছে। দলটির আমির শফিকুর রহমান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াতের অবস্থান এনসিপির হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্যকে সমর্থন করছে। অন্য দলগুলোর মধ্যেও ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
হাসনাত আব্দুল্লাহর অভিযোগের বিষয়ে সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া জানতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহর অভিজ্ঞতা ব্যক্তিগত, কিন্তু দাবি দলগত পর্যায়ের। আমরা শুরু থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে।’
তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী থেকে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনার প্রস্তাব এসেছে এবং এটি কেবল দেশের ভেতর থেকেই নয়, দেশের বাইরের শক্তির মাধ্যমেও এই প্রচেষ্টা চলছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘চলমান বিষয়টি সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। আওয়ামী লীগকে ঘিরে যা কিছুই হবে, তার নেতৃত্বে শেখ হাসিনাই থাকবেন।’
আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থাকলেও, বিএনপি একটি নতুন নেতৃত্বের আওয়ামী লীগ মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপি আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ এবং বিচার দাবি করছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা না হলেও, পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।