অভয়নগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীকে মারপিট, থানায় অভিযোগ
যশোরের অভয়নগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী পরিবারের দুই সদস্যকে মারপিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পাথালিয়া গ্রামের বাগপাড়া এলাকায়। আহতরা হলেন, একই এলাকার কানাইলাল বিশ্বাসের ছেলে শ্যামল কুমার বিশ্বাস (৫৬) ও তার স্ত্রী অনিমা সরকার (৪২)।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন, পাথালিয়া গ্রামের বাগপাড়া এলাকার দলিল উদ্দিন মোল্যার ছেলে বাবলু মোল্যা (৫০) ও তার ছেলে আরাফাত মোল্যা (২৫)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শ্যামল কুমার বিশ্বাস তার আমবাগান সুরক্ষিত করতে কচা পুঁতে বেড়া দিয়ে ঘিরে দেন। তবে প্রতিবেশী বাবলু মোল্যা সেই বেড়া উপড়ে ফেলে। আমবাগান ঘেরা বেড়া উপড়ে ফেলার কারণ জানতে চাইলে বাবলু মোল্যা ও তার ছেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং প্রথমে অনিমা সরকার ও পরে শ্যামল কুমার বিশ্বাসকে বাঁশ দিয়ে মারধর করে।
শ্লীলতাহানির অভিযোগ: মারধরের একপর্যায়ে অনিমা সরকারের শাড়ি টেনে হিঁচড়ে শ্লীলতাহানি ঘটানো হয় এবং তার হাতে থাকা স্বর্ণের চুড়ি ও স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য দেড় লাখ টাকা। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, “আমরা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তারা আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করছে। আমাদের জমির উপর দিয়ে বেআইনিভাবে যাতায়াত করতে না দেওয়ায় তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
ভুক্তভোগী অনিমা সরকার বলেন, “পাঁচ তারিখের পর থেকে বাবলু মোল্যা এই এলাকার সকল হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
এদিকে মুসলিম প্রতিবেশীরাও বাবলু মোল্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, তিনি ও তার ছেলে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
মারধরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অভিযুক্ত বাবলু মোল্যা বলেন, “তার সাথে জায়গা নিয়ে কোনো বিবাদ নেই। তবে তারা আমার যাতায়াতের পথে বেড়া দেওয়ায় আমি তা ভেঙে দিয়েছি। তাতে তারা আমার বাড়িতে এসে গালিগালাজ করলে আমি তাদের কিলঘুষি মারি।”
অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আলিম বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”