ঢাকা ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণডোরা ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি ১০ সদস্যের অনাস্থা

অনাস্থা দিলেই কি পদ যাবে চেয়ারম্যানের? আইন কী বলছে?

স্টাফ রিপোর্টার::

প্রায় সময়ই দেশের বিভিন্ন স্থানে ইউপি চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিতে দেখা যায় ইউপি সদস্যদের। সেখানে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বেশির ভাগ অভিযোগ থাকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় না করা, অনিয়ম-দুর্নীতি, বিভিন্ন প্রকল্পে স্বেচ্ছাচারিতা, প্রভাব খাটানো নিয়ে।

একজন চেয়ারম্যান, ৯ জন সদস্য ও তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্যসহ মোট ১৩ জন নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়। তারা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য কমপক্ষে নয়জন সদস্যের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়।

চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সমন্বয়ে ইউনিয়নের উন্নয়নকাজ করার কথা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সদস্যরা উপেক্ষিত থাকেন, বিশেষ করে নারী সদস্যরা বেশি অবহেলিত হন বলে অভিযোগ প্রচলিত আছে। আর তাতে চেয়ারম্যানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয় সদস্যদের। সাম্প্রতিক সময়ে হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ১১নং ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের খবর এসেছে গণমাধ্যমে।

গত ৩০ জুন রবিবার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা ইউপির চেয়ারম্যান হোসাইন মুহাম্মদ আদিল জজ মিয়া বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পরিষদের ১০ সদস্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে এই অনাস্থার কথা জানানো হয়। সেখানে সাধারণ ও সংরক্ষিত ১২ সদস্যের মধ্যে ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদে প্রতি মাসে মাসিক সভার আহবান করার নিয়ম থাকা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান কোনো সভা আহবান করেননি। চেয়ারম্যান জজ মিয়া নিজ বাড়িতে বসে নিজের ইচ্ছামতো পরিষদের কার্যক্রম করেন। পরিষদের বিভিন্ন বরাদ্দ যেমন টিআর, কাবিখা, কাবিটা ইত্যাদি নিজ ইচ্ছামতো প্রকল্প তৈরি করে খাদ্যশস্য ও টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাবপত্র সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের অবহিত করা হয় না সহ মোট ১৩টি অভিযোগ এনে জজ মিয়ার প্রতি অনাস্থা এনেছেন ১০জন সদস্য। তারা সে সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে ব্রাহ্মণডোরা ইউপির চেয়ারম্যান হোসাইন মুহাম্মদ আদিল জজ মিয়া চেকপোস্টকে বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তাদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা হয়নি। কেন আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে, তাও জানি না।’

সদস্যদের এমন অনাস্থায় কতটা কোণঠাসা হন চেয়ারম্যান? কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনাস্থায় কি চেয়ারম্যানের পদ চলে যায়? আইন কী বলে?

আইন বলছে, কোনো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে। তবে অনাস্থা প্রস্তাব পাওয়ার পর তদন্তসহ কয়েকটি প্রক্রিয়া শেষে কমপক্ষে ৯ জন সদস্যের ভোটে সেটি পাস হতে হয়। এরপর সরকার বিবেচনা করেন ওই চেয়ারম্যানকে পদে রাখা হবে কি না।

স্থানীয় সরকার আইন-২০০৯ এ বলা আছে, ‘পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে। পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের স্বাক্ষরে লিখিত অভিযোগ পরিষদের যেকোনো একজন সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) নিকট দাখিল করিবেন।’

‘অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ইউএনও একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করিবেন। সেই কর্মকর্তা ১০ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবেন। জবাব সন্তোষজনক না হলে তদন্ত কর্মকর্তা ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবের অভিযোগ তদন্ত করবেন।’

এর পরের ধাপ সম্পর্কে আইনে বলা হয়েছে, ‘তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হইলে তদন্ত কর্মকর্তা ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিবেন। সভায় তদন্ত কর্মকর্তা পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত থাকিবেন। সভাটি নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোনো কারণ ছাড়া স্থগিত করা যাইবে না এবং মোট নির্বাচিত সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য সমন্বয়ে সভার কোরাম গঠিত হইবে।’

‘অনাস্থা প্রস্তাবটি কমপক্ষে ৯ জন সদস্য কর্তৃক ভোটে গৃহীত হইতে হইবে। সভা শেষে তদন্ত কর্মকর্তা অনাস্থা প্রস্তাবের কপি, ব্যালট পেপার, ভোটের ফলাফলসহ সভার কার্যবিবরণী সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন। সরকার উপযুক্ত বিবেচনা করিলে অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন অথবা অননুমোদন করিবে।’

তবে এ ব্যবস্থাটি প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করেন অনেকে। তাদের মতে, সদস্যদের নয় জনগণের মধ্য থেকে অনাস্থা প্রস্তাব আসা উচিত।

কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ মনে করেন, সদস্যরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত, তাই চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারাই অনাস্থা দেবেন।

তিনি বলেন, ‘একজন চেয়ারম্যান যদি তার দায়িত্বে থাকাবস্থায় কোনো ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তাহলে তার বিরুদ্ধে সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারেন। জনগণ যেহেতু সদস্যদের নির্বাচিত করেন সেহেতু চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারাই অনাস্থা দেবেন। অপরাধ প্রমাণিত হলে সরকার তার পদ স্থগিত ঘোষণা করে নতুন নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।’

অধিকাংশ সদস্য যদি অনাস্থা দেয় এবং চেয়ারম্যানের অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে আইন অনুযায়ী তার পদ চলে যাবে। এই সিস্টেমটা প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘একজন চেয়ারম্যানকে মেম্বাররা নির্বাচিত করেন না। জনগণ ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করে। এখানে হওয়া উচিত ছিল জনগণ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানাবে কিন্তু এখন অনাস্থা জানাচ্ছে মেম্বাররা।’ এই আইনটি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে এবং আইনটি পরিবর্তন হওয়া উচিত বলে মনে করেন সুজন সম্পাদক।

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৩:৪৪:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
৫৪৫ বার পড়া হয়েছে

ব্রাহ্মণডোরা ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি ১০ সদস্যের অনাস্থা

অনাস্থা দিলেই কি পদ যাবে চেয়ারম্যানের? আইন কী বলছে?

আপডেট সময় ০৩:৪৪:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

প্রায় সময়ই দেশের বিভিন্ন স্থানে ইউপি চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিতে দেখা যায় ইউপি সদস্যদের। সেখানে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বেশির ভাগ অভিযোগ থাকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় না করা, অনিয়ম-দুর্নীতি, বিভিন্ন প্রকল্পে স্বেচ্ছাচারিতা, প্রভাব খাটানো নিয়ে।

একজন চেয়ারম্যান, ৯ জন সদস্য ও তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্যসহ মোট ১৩ জন নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়। তারা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য কমপক্ষে নয়জন সদস্যের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়।

চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সমন্বয়ে ইউনিয়নের উন্নয়নকাজ করার কথা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সদস্যরা উপেক্ষিত থাকেন, বিশেষ করে নারী সদস্যরা বেশি অবহেলিত হন বলে অভিযোগ প্রচলিত আছে। আর তাতে চেয়ারম্যানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয় সদস্যদের। সাম্প্রতিক সময়ে হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ১১নং ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের খবর এসেছে গণমাধ্যমে।

গত ৩০ জুন রবিবার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা ইউপির চেয়ারম্যান হোসাইন মুহাম্মদ আদিল জজ মিয়া বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পরিষদের ১০ সদস্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে এই অনাস্থার কথা জানানো হয়। সেখানে সাধারণ ও সংরক্ষিত ১২ সদস্যের মধ্যে ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদে প্রতি মাসে মাসিক সভার আহবান করার নিয়ম থাকা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান কোনো সভা আহবান করেননি। চেয়ারম্যান জজ মিয়া নিজ বাড়িতে বসে নিজের ইচ্ছামতো পরিষদের কার্যক্রম করেন। পরিষদের বিভিন্ন বরাদ্দ যেমন টিআর, কাবিখা, কাবিটা ইত্যাদি নিজ ইচ্ছামতো প্রকল্প তৈরি করে খাদ্যশস্য ও টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাবপত্র সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের অবহিত করা হয় না সহ মোট ১৩টি অভিযোগ এনে জজ মিয়ার প্রতি অনাস্থা এনেছেন ১০জন সদস্য। তারা সে সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে ব্রাহ্মণডোরা ইউপির চেয়ারম্যান হোসাইন মুহাম্মদ আদিল জজ মিয়া চেকপোস্টকে বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তাদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা হয়নি। কেন আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে, তাও জানি না।’

সদস্যদের এমন অনাস্থায় কতটা কোণঠাসা হন চেয়ারম্যান? কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনাস্থায় কি চেয়ারম্যানের পদ চলে যায়? আইন কী বলে?

আইন বলছে, কোনো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে। তবে অনাস্থা প্রস্তাব পাওয়ার পর তদন্তসহ কয়েকটি প্রক্রিয়া শেষে কমপক্ষে ৯ জন সদস্যের ভোটে সেটি পাস হতে হয়। এরপর সরকার বিবেচনা করেন ওই চেয়ারম্যানকে পদে রাখা হবে কি না।

স্থানীয় সরকার আইন-২০০৯ এ বলা আছে, ‘পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে। পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের স্বাক্ষরে লিখিত অভিযোগ পরিষদের যেকোনো একজন সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) নিকট দাখিল করিবেন।’

‘অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ইউএনও একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করিবেন। সেই কর্মকর্তা ১০ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবেন। জবাব সন্তোষজনক না হলে তদন্ত কর্মকর্তা ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবের অভিযোগ তদন্ত করবেন।’

এর পরের ধাপ সম্পর্কে আইনে বলা হয়েছে, ‘তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হইলে তদন্ত কর্মকর্তা ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিবেন। সভায় তদন্ত কর্মকর্তা পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত থাকিবেন। সভাটি নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোনো কারণ ছাড়া স্থগিত করা যাইবে না এবং মোট নির্বাচিত সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য সমন্বয়ে সভার কোরাম গঠিত হইবে।’

‘অনাস্থা প্রস্তাবটি কমপক্ষে ৯ জন সদস্য কর্তৃক ভোটে গৃহীত হইতে হইবে। সভা শেষে তদন্ত কর্মকর্তা অনাস্থা প্রস্তাবের কপি, ব্যালট পেপার, ভোটের ফলাফলসহ সভার কার্যবিবরণী সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন। সরকার উপযুক্ত বিবেচনা করিলে অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন অথবা অননুমোদন করিবে।’

তবে এ ব্যবস্থাটি প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করেন অনেকে। তাদের মতে, সদস্যদের নয় জনগণের মধ্য থেকে অনাস্থা প্রস্তাব আসা উচিত।

কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ মনে করেন, সদস্যরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত, তাই চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারাই অনাস্থা দেবেন।

তিনি বলেন, ‘একজন চেয়ারম্যান যদি তার দায়িত্বে থাকাবস্থায় কোনো ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তাহলে তার বিরুদ্ধে সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারেন। জনগণ যেহেতু সদস্যদের নির্বাচিত করেন সেহেতু চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারাই অনাস্থা দেবেন। অপরাধ প্রমাণিত হলে সরকার তার পদ স্থগিত ঘোষণা করে নতুন নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।’

অধিকাংশ সদস্য যদি অনাস্থা দেয় এবং চেয়ারম্যানের অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে আইন অনুযায়ী তার পদ চলে যাবে। এই সিস্টেমটা প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘একজন চেয়ারম্যানকে মেম্বাররা নির্বাচিত করেন না। জনগণ ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করে। এখানে হওয়া উচিত ছিল জনগণ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানাবে কিন্তু এখন অনাস্থা জানাচ্ছে মেম্বাররা।’ এই আইনটি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে এবং আইনটি পরিবর্তন হওয়া উচিত বলে মনে করেন সুজন সম্পাদক।