খালেদা জিয়া-তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তি, দুর্নীতির অভিযোগে ঘেরাওয়ে প্রকৌশলী রেজাউন নবী
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে বদলি হওয়া প্রকৌশলী মোঃ রেজাউন নবী আবারও বিতর্কের মুখে। মাধবপুর উপজেলা এলজিইডি অফিসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, কমিশন বাণিজ্য, ঠিকাদার হয়রানি, অফিসকর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও গালিগালাজসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা এলজিইডি অফিসের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রকৌশলী রেজাউন নবী কমিশন ছাড়া কোনো ঠিকাদারকে বিল প্রদান করেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, “উপজেলা প্রকৌশলী আমাকে স্পষ্টভাবে বলেন, কমিশন না দিলে কোনো বিল দেওয়া হবে না। নগদ না পারলে নানা অজুহাতে হয়রানি করেন।”
এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর বেতন আটকে রেখেও কমিশন আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রতিবেদকের কাছে থাকা একটি অডিও রেকর্ডেও এমন দাবির প্রমাণ মিলেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি অবসরপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক সুলতান আহমেদের মাধ্যমে প্রতি ফাইলের জন্য ২০-২৫ হাজার টাকা নিয়ে ইমারত/স্থাপনা নকশা অনুমোদন করে থাকেন। উপজেলা পরিষদের সচিব জানিয়েছেন, “আমার কাছে এসব অনুমোদিত নকশার কোনো কপি জমা দেয়নি রেজাউন নবী।”
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স রনি ট্রেডার্স’-এর কাজও তিনি এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বরুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গুমুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন হস্তান্তরের সময় তিনি তদারকি কর্মকর্তাকে না জানিয়ে সরাসরি প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর পত্র পাঠিয়েছেন।
রেজাউন নবী স্থানীয়দের উদ্দেশে দাবি করেছেন, “বিভাগীয় কমিশনার আমার বন্ধু, কেউ আমাকে কিছু করতে পারবে না।”
রেজাউন নবীর বিরুদ্ধে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগও রয়েছে। ৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখে তারা প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়, তিনি নিয়মিত গালিগালাজ ও বদলির হুমকি দেন। তার মুখের ভাষায় থাকে ‘শালা’, ‘ভাইনচোদ’, ‘জারজ’ ইত্যাদি অকথ্য শব্দ।
এছাড়াও, কারিগরি কর্মকর্তারা নির্মাণকাজে ত্রুটি চিহ্নিত করলেও ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে এককভাবে ঢালাই সম্পন্ন করেন।
যদিও সাবেক হিসাবরক্ষক সুলতান আহমেদ ২০২৪ সালের জুনে অবসর নিয়েছেন, তবুও তিনি দেড় বছর ধরে অফিসে নিয়মিত কাজ করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তার মাধ্যমেই ঠিকাদারদের কাছ থেকে অবৈধ লেনদেন এবং কমিশন সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এর আগে চাঁদপুরে দায়িত্ব পালনকালে ৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে যুবদল নেতাদের সামনে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন রেজাউন নবী। ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে তাকে রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় বদলি করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউন নবী দাবি করেন, “এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”











